এ বছর আমন মৌসুমে রংপুর বিভাগে ধান ও চাল সংগ্রহের যে কার্যক্রম সরকারিভাবে শুরু করা হয়েছিল তা ব্যর্থতায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। প্রকৃত চাষীরা ধান সরকারি গুদামে বিক্রি করতে মোটেই আগ্রহী ছিলেন না।
সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে হাট-বাজারগুলোতেই ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকদের কাছ থেকে তেমন কোনো সারা পায়নি সরকারের এ কার্যক্রম। এ ছাড়াও খাদ্য গুদামগুলোতে চলে বেপরোয়া হয়রানি যা কৃষকদের জন্য চরম ভোগান্তির।
উৎকোচ ছাড়া মেলে না ধান দেওয়ার সুযোগ ফলে কৃষকরা বাজারেই বিক্রি করেন তাদের ধান।
নানা অনিয়মে খাদ্যগুদাম ভরে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নানাবিধ কারণে এ অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। তাছাড়া খাদ্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নানামুখী হয়রানীর কারণে মিল মালিক ও চাষীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন সরকারে এ ধান-চাল সংগ্রহের অভিযান থেকে। তাই রংপুর বিভাগের ৮ জেলার কোথাও ধান- চাল সংগ্রহ অর্জিত হয়নি লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেও।
রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় চলতি বছর ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৪২ হাজার মেট্রিক টন। সোমবার বিকেল পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। একইভাবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। অর্জিত হয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার মেট্রিক টন।
রংপুর অঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে অধিকাংশ কৃষকই জানান,আমরা ধান চাষী, ধান চাষ করে সরকারের কাছে ধান দিতে চাই, কিন্তু ধানের ন্যায্য মূল্য না দেওয়ায় ধান বাজারে বিক্রি করেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, খাদ্যগুদামে ধান দিতে গেলে নানা ধরনের অনিয়ম ও হয়রানির শিকার হতে হয়, তাই অনেকেই সেখানে ধান দেন না।
পরিসংখ্যানে দেখা এই বিভাগের ৮ জেলার ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান মুখ থুবরে পড়েছে। কারণ হিসেবে
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ভালো দাম ও খাদ্য গোডাউনগুলোতে বেপরোয়া
হয়রানির কারণেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার অন্যতম কারণ।
রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের বলেন, এ বছর বৈরি আবহাওয়া ও করোনার থাবায় খাদ্য সংগ্রহ অভিযানে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধান চালের দাম বেশি থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।