বরিশাল অফিস
প্রেমের ফাঁদ ও যৌ সর্ম্পকের প্রলোভন দেখিয়ে উচ্চবিত্তদের ফাঁদে ফেলে মুক্তিপন আদায়কারী চক্র আটক করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। প্রতারণার শিকার নগরীর প্রতিষ্ঠিত এক ঠিকাদারের দেওয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাতভর অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের ১০ জনকে এখন পর্যন্ত আটক করেছে গোয়েন্দা শাখা।
বুধবার বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের অস্থায়ী কার্যালয়ের মতবিনিময় সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান নগর বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হয়দার।
বেলা সাড়ে ১২টায় শুরু হওয়া ওই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুই মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে ‘টার্গেট ধনাঢ্যদের’ কাছ থেকে চাহিদামাফিক অর্থ হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। এরমধ্যে প্রথমত যৌন সর্ম্পক স্থাপনের প্রলোভন দেখিয়ে ভাড়া ফ্লাটে নিয়ে চক্রের অর্ন্তভূক্ত কলেজ পড়–য়া তরুনীদের সাথে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় চক্রের অপর সদস্য কর্তৃক আটক। দ্বিতীয়ত ডিবি পরিচয়ে শারীরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে অর্থ আদায় করে থাকে। পুলিশ জানিয়েছে, শুধু ১০ জনই নয় এই চক্রে আরও স্কুল-কলেজের তরুনী জড়িত থাকার তথ্য তারা পেয়েছে।
জানা গেছে, সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ম্যানেজমেন্ট চতুর্থ বর্ষের ছাত্রীর সাথে দীর্ঘ একমাস ধরে মুঠোফোনে প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়েন বগুড়া রোড মুন্সি গ্যারেজের বাসিন্দা ঠিকাদার সোহেল আল মাসুদ। ওদিকে বিএম কলেজের যে তরুনীর সাথে প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে পরেন সেই তরুনী ড্রিম হাউজ নামক ব্যাক্তিমালিকানাধীন ছাত্রীমেসে বসবাস করতেন। প্রেমের সর্ম্পকের সূত্র ধরে মঙ্গলবার (১০ মার্চ) দুজনে সরকারি বরিশাল কলেজের সামনে দেখা করেন এবং কলেজ পড়ুয়া ওই তরুনীর আত্মীয়ের বাসায় অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর জন্য সম্মত হন। পুলিশ জানিয়েছে, বিসিসির ১৮ নং ওয়ার্ডের চ্যাটার্জী লেনের লাবু মিয়ার ভাড়া বাসায় ঠিকাদারকে নিয়ে যান তরুনী। সেখানে নিয়ে ঠিকাদারকে আটকে বিবস্ত্র করে। ঠিক তখন প্রতারক চক্রের সদস্য জাকির ও মামুন ডিবি সদস্যের পরিচয় দিয়ে আটক করে মারধর করেন। একপর্যায়ে টাকা দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানায়। ওই ঠিকাদার আত্ম রক্ষার্থে সঙ্গে থাকা ৯ হাজার এবং বিকাশের মাধ্যমে আরও ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে জিম্মিদশা থেকে মুক্তিপান।
ঠিকাদার সোহেল আল মাসুদ ১০ মার্চ সন্ধ্যায় মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন দিলে অভিযানে নামে ডিবি পুলিশ। আভিযানিক দলের এসআই ছগির হোসেন ও মহিউদ্দিন মাহি জানান, এই চক্রের সাথে আরও অনেকে জড়িত। আমরা চেষ্টা করছি পুরো চক্রকে আইনের আওতায় আনার জন্য।
আটককৃতরা হলেন, জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা মনি, মকবুল হোসেন ও তার স্ত্রী লিজা বেগম, মামুন বায়াতী ওরফে কাশিপুরের ফেন্সি মামুন , সেলিম হাওলাদার, আরিফুর রহমান তালুকদার ওরফে মুরগী আরিফ , ফারজানা আক্তার ঝুমুর, খুশি বেগম ও আশা আক্তার।
আটক চক্রের মূল হোতা মামুন একজন মাদক কারবারি ও মুরগী আরিফ তার সহযোগী হিসেবে সুদীর্ঘ দিন ধরে রয়েছে বলে জানা গেছে।