December 27, 2024, 5:30 am

ট্রাম্প বলেছেন নির্বাচন নিরপেক্ষ হলে ফল মেনে নিব

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : Saturday, October 17, 2020,
  • 142 Time View
ট্রাম্প
ট্রাম্প

আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলের নির্বাচনী জনসমাবেশে এখন যুক্তরাষ্ট্র উত্তাল। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিশিগান ও উইসকনসিনে সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

তিনি প্রথমবারের মতো নির্বাচনের ফল মেনে নেয়ার কথা জানিয়ে বলেছেন, সেক্ষেত্রে নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ। যদিও তিনি এক সমাবেশে কৌতুক করে জানিয়েছেন, নির্বাচনে হারলে হয়তো তাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। প্রথমবারের মতো টিভিতে ভোটারদের মুখোমুখি হন ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন।

এতে ট্রাম্পকে ভোটাররা প্রশ্নবানে জর্জরিত করে ফেলেন। যদিও অনেক রিপাবলিকান নেতাকেই এবারের নির্বাচনে তিনি পাশে পাচ্ছেন না। অন্যদিনে আগাম ভোটের নতুন রেকর্ড হয়েছে। খবর বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা ও রয়টার্সের

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার মিশিগান ও উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে নির্বাচনী সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শনিবার দুই অঙ্গরাজ্যে সমাবেশের পর রাজনৈতিক সমর্থন আদায়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যগুলোতে সফর শুরু করেন তিনি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র আড়াই সপ্তাহ বাকি।

সদ্যই নিজেকে করোনামুক্ত দাবি করা ট্রাম্প জোরোশোরে প্রচার শুরু করেছেন। চার বছর আগে যে অঙ্গরাজ্যগুলোতে জয় পেয়েছিলেন, সেগুলোতে জয়ের ধারা বজায় রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। ২০১৬ সালের নির্বাচনে মিশিগান ও উইসকনসিনে জয় পেয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে এ বছরের নির্বাচনকে সামনে রেখে চালানো জনমত জরিপে দেখা গেছে দুই অঙ্গরাজ্যেই তিনি বাইডেনের চেয়ে পিছিয়ে।

ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফলকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করছেন তার উপদেষ্টারা। এ্যারিজোনাসহ ঐতিহাসিকভাবে শক্ত রিপাবলিকান ঘাঁটি বলে বিবেচিত অঙ্গরাজ্যগুলোতেও আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন ট্রাম্প। শনিবার তিনি মিশিগান ও উইসকনসিনে সমাবেশ করবেন। রবিবার নেভাদাতে ও সোমবার এ্যারিজোনায় সমাবেশ করবেন।

 

যুক্তরাষ্ট্রেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবার আগাম ভোটের ক্ষেত্রে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। ইউএস ইলেকশন প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার পর্যন্ত দেশটির দুই কোটি ২০ লাখের বেশি ভোটার ডাকযোগে বা সশরীরে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন।

গত বছর একই সময় মাত্র ৬০ লাখ ভোট পড়েছিল। মহামারী নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতেই অনেকে আগাম ভোটকে বেছে নিচ্ছেন বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। আগাম ভোটের প্রথমদিনই গত মঙ্গলবার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে রেকর্ডসংখ্যক ভোট পড়ে।

এর আগেরদিন সোমবার কলম্বাস ডেতে জর্জিয়ায় এক লাখ ২৬ হাজার ৮৭৬ ভোট পড়ে। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে এর আগে কখনই আগাম ভোটে এতটা সাড়া মেলেনি। ওহাইওতে ডাকযোগে ২৩ লাখের বেশি ভোট পড়েছে। ২০১৬ সালের চেয়ে এটি দ্বিগুণ।

 

ট্রাম্প বলেছেন, আসছে নির্বাচনে তিনি হেরে গেলে তাকে হয়তো দেশ থেকে চলে যেতে হবে। ১৬ অক্টোবর জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ম্যাকোন শহরে আয়োজিত নির্বাচনী সমাবেশে কৌতুক করে ট্রাম্প এ কথা বলেন।

ট্রাম্প বলেন, তিনি আশাবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছেন। প্রত্যাশা আর অবারিত সুযোগ সৃষ্টি করার কাজ তিনি করে যাচ্ছেন। বাইডেনের সভায় মাস্ক পরা ও সামাজিক ব্যবধান মেনে চলার বিষয় নিয়ে ট্রাম্প আবারও বিদ্রƒপও করেন।

সমাবেশে উপস্থিত তার উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের অনেকেরই মাস্ক ছিল না। সামাজিক ব্যবধান মেনে চলারও কোন প্রয়াস ছিল না। ট্রাম্প বলেন, এসব নিয়ে কৌতুক করা ঠিক হচ্ছে না। আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর সঙ্গে তিনি নির্বাচনে লড়ছেন। এ কারণেই তিনি বেশ চাপে আছেন।

 

ভোটবঞ্চিত ৫২ লাখ মার্কিনী ॥ আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না দেশটির প্রায় ৫২ লাখ নাগরিক। বর্তমান ও আগের ক্রিমিনাল রেকর্ড তথা অপরাধ খতিয়ানের কারণে নবেম্বরের নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে এ বিশালসংখ্যক ভোটার।

অস্বাভাবিকভাবে শ্বেতাঙ্গ নাগরিকদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকরাই বেশি বঞ্চিত। ২০১৬ সালে ভোট দিতে না পারা ব্যক্তিদের সংখ্যা আরও বেশি ছিল। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ভোটাধিকার সুরক্ষার উদ্যোগের ফলে গতবারের চেয়ে এবার এ সংখ্যা অন্তত ১৫ শতাংশ কমেছে।

এবার পেছনে ফেলল ডেমোক্র্যাটরা। দলটির তহবিলবিষয়ক সংগঠন এক্টব্লু বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের সংগৃহীত তহবিলের পরিমাণ ১৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। সেপ্টেম্বরে বাইডেনের প্রচার টিম সংগ্রহ করেছে ৩৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

মার্কিন গণমাধ্যম এনবিসি টেলিভিশনের মিট দ্য ভোটার অনুষ্ঠানে হাজির হন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অনুষ্ঠানের মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করে আলোচনায় উঠে এসেছেন অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক সাভানাহ গুথ্রি।

দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে কার্যত চেপে ধরেছিলেন সাভানাহ। ট্রাম্পের ঋণ, করোনা মোকাবেলায় নেয়া পদক্ষেপ এবং ডানপন্থী ষড়যন্ত্র নিয়ে একের পর এক ছুড়েন। তখন ট্রাম্পকে অস্বস্তিতে পড়তে দেখা যায়।

 

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের মাত্র ১৭ দিন আগে সরাসরি বির্তক নয় বরং টিভিতে ‘টাউন হল’ আদলের অনুষ্ঠান সম্প্রচারে ভোটারদের মুখোমুখি হয়েও করোনা মহামারী নিয়ে ঝগড়া করতে দেখা গেছে দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী রিপাবলিকান ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট বাইডেনকে। বাইডেন করোনা সামাল দেয়ায় ট্রাম্পের খুঁত ধরিয়ে দিয়েছেন। আর ট্রাম্পও নিজের পক্ষে সাফাই দিয়ে তা খ-নের চেষ্টা করেছেন।

সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক পরার গুরুত্ব নিয়েও একে অপরের বিরোধিতা করতে গেছে। দুটি আলাদা টিভি চ্যানেল অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করেছে। ফ্লোরিডার মিয়ামিতে এনবিসি টিভি নেটওয়ার্ক ট্রাম্পের টাউন হল বৈঠক সম্প্রচার করেছে। ফিলাডেলফিয়ায় এবিসি টিভি নেটওয়ার্কে সম্প্রচার করা হয়েছে বাইডেনের অনুষ্ঠানটি। করোনা নিয়ে ট্রাম্প-বাইডেনের আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে দুটি অনুষ্ঠানই।

 

নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই রাজনীতির মাঠের অস্থিরতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ট্রাম্পের কাছ থেকে নিজের দল রিপাবলিকান দলের অনেক নেতা নিজেদের সরিয়ে রাখছেন। ট্রাম্পের সম্ভাব্য পরাজয়ের সঙ্গে নিজেদের নাম তারা যুক্ত করতে চান না। নির্বাচনের পর ট্রাম্পহীন ওয়াশিংটনের রাজনীতি মাথায় রেখে নিজেদের আগেই প্রস্তুত করতে শুরু করেছেন তারা।

ট্রাম্প বলেছেন, নবেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি পরাজিত হলে সেই ফল মেনে নেবেন। শুক্রবার প্রথমবারের মতো তিনি বলেন, নির্বাচনে যদি পরাজিত হই তাহলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করব। জাল ভোট নিয়ে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হতে হবে। সঠিকভাবে ভোট গণনা করতে হবে। নির্বাচনে পরাজিত হলে আপনি কী শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ইয়েস, আই উইল। আমি চাই

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71