December 23, 2024, 9:48 am

টাকায় মল-মূত্রের ব্যাকটেরিয়া পেয়েছিলেন গবেষকরা

Reporter Name
  • Update Time : Friday, March 27, 2020,
  • 138 Time View

চীনে সৃষ্ট প্রণঘাতী করোনা ভাইরাসে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৪ হাজার ৮৭১ জনের। আক্রান্ত হয়েছে 549,304 প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখের মতো। ভাইরাসটির বিস্তার এবং প্রাণহানি নিয়ে বিশ্বজুড়ে বেড়েই চলেছে আতঙ্ক। তবে আশার দিক হলো করোনা মোকাবেলা করে সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ৬৫৪ জন।

মানুষ থেকে মানুষের দেহে এই ভাইরাস কীভাবে ছড়ায় সে বিষয়ে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। তবে সাধারণ কিছু সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এসব সতর্কতা অবলম্বন করলে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা কিছুটা হলেও কমে আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

১. গণপরিবহন: গণপরিবহন এড়িয়ে চলা কিংবা সতর্কতার বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বাস, ট্রেন কিংবা অন্য যে কোন ধরণের পরিবহনের হাতল কিংবা আসনে করোনা ভাইরাস থাকতে পারে।

সেজন্য যে কোনো পরিবহনে চলাফেরার ক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা এবং সেখান থেকে নেমে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

২. কর্মক্ষেত্র: অফিসে একই ডেস্ক এবং কম্পিউটার ব্যবহার করলেও ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁচি-কাশি থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ায়। যে কোনো জায়গায় করোনা ভাইরাস কয়েক ঘণ্টা থাকে। এমনকি কয়েকদিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। অফিসের ডেস্কে বসার আগে কম্পিউটার, কিবোর্ড এবং মাউস পরিষ্কার করে নিন।

৩. জনসমাগমস্থল: যেসব জায়গায় মানুষ বেশি জড়ো হয় সেসব স্থান এড়িয়ে চলা কিংবা বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে খেলাধুলার স্থান, সিনেমা হল থেকে শুরু করে ধর্মীয় স্থানও রয়েছে।

বাংলাদেশের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে জুমার নামাজের সময় বাড়ি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সৌদি আরব ইতোমধ্যেই ওমরাহ বন্ধ করেছে।

৪. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যখন গ্রাহকরা যায় তখন অনেকেই একটি কলম ব্যবহার করেন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি যদি সে কলম ব্যবহার করে তাহলে পরবর্তী ব্যবহারকারীদেরও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। সেজন্য নিজের কলম আলাদা করে রাখতে পারেন। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে। এছাড়া টাকা উত্তোলনের জন্য যে এটিএম বুথ ব্যবহার করা হয়, সেখান থেকেও সংক্রমণ হতে পারে। কারণ এটিএম বুথের বাটন অনেকে ব্যবহার করে।

৫. লিফট: ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে আরেকটি জায়গা হতে পারে বাড়ি কিংবা অফিসের লিফট। লিফট ব্যবহারের সময় নির্ধারিত ফ্লোরে যাবার জন্য লিফটের বাটন অনেকে ব্যবহার করছেন। বিভিন্ন অফিস ভবনে প্রতিদিন শত-শত মানুষ লিফট ব্যবহার করছেন।
এদের মধ্যে কেউ যদি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী থাকেন এবং সে লিফটের বাটনে অন্যদের আঙ্গুল গেলেও সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।

৬. টাকা-পয়সা: ব্যাংক নোট বা টাকায় নানা ধরণের জীবাণুর উপস্থিতি শনাক্ত করার ঘটনা নতুন নয়। এমনকি ব্যাংক নোটের মাধ্যমে সংক্রামক নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ার কথাও বলেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশের একদল গবেষক গত বছরের অগাস্ট মাসে বলেছিলেন, তারা বাংলাদেশি কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রায় এমন ধরণের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পেয়েছেন, যা সাধারণত মল-মূত্রের মধ্যে থাকে।

গতমাসে ভাইরাসের উপস্থিতি নিয়ে টাকা বা ব্যাংক নোট জীবাণুমুক্ত করার একটি উদ্যোগ দেখা যায় চীনে।

দেশটিতে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর সেখানে ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে বাজার থেকে ব্যাংক নোট সরিয়ে নিয়ে তা আবার জীবাণুমুক্ত করে বাজারে ছাড়ে দেশটি।

৭. শুভেচ্ছা বিনিময়: করমর্দন এবং কোলাকুলির মাধ্যমেও করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে। আপনি যে ব্যক্তির সাথে কোলাকুলি এবং করমর্দন করছেন, তিনি যদি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন তাহলে সেটি অন্যের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। এজন্য করমর্দন এবং কোলাকুলির না করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন সবকিছুর মূল কথা হচ্ছে নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখা। হাত না ধুয়ে নিজের মুখমণ্ডল স্পর্শ করবেন না। এটি হলে ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।

সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য নিয়মিত ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71