December 26, 2024, 4:05 am

মণিরামপুরে হত্যার ভয় দেখিয়ে মামা কর্তৃক শিশু ধর্ষণ

মণিরামপুর প্রতিনিধি:
  • Update Time : Thursday, October 29, 2020,
  • 143 Time View

ভিকটিম প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে নির্যাতনের বর্ণনা দিলেও ঘটনার ৪ দিন পর অজ্ঞাত করণে সুর পাল্টানোর অভিযোগ
মণিরামপুরে হত্যার ভয় দেখিয়ে মামা কর্তৃক ৫ম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টির পর ধর্ষিতা ওই শিশু এসিল্যান্ড, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা এবং থানা পুলিশসহ গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে তার উপর চালানো পাশবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিলেও ধর্ষককে রক্ষায় ঘটনার ৪ দিন পর ভিন্ন সুরের সৃষ্টি হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার শিশুর মা ভারতে অবস্থান করার কারণে মামলা দায়েরে বিলম্ব হলে প্রশাসনের নির্দেশে ভিকটিমকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ধর্ষকের বাড়িতে অপর এক মামার জিম্মায় রাখা হয়। গতকাল বুধবার নির্যাতনের শিকার মেয়েকে সাথে নিয়ে তার মা ও সৎ পিতাসহ কয়েকজন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরে হাজির হয়ে সুর পাল্টিয়ে দাবী করেন তাদের মেয়ের কোন ক্ষতি হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, মোটা অংকের লেনদেনসহ আপন ধর্ষক ভাইকে রক্ষা করতে জঘন্যতম এমন অপরাধ ধামাচাপা দিতেই নির্যাতনের শিকার শিশুর মা ভারত থেকে দেশে ফিরে দ্বিতীয় স্বামীকে সাথে নিয়ে সুর পাল্টানোর পরিকল্পনা করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেবীদাসপুর গ্রামের মোহাম্মদ সরদারের পুত্র শফিকুল (৩৪) গলা কেটে ও বালিশ চাপায় হত্যার ভয় দেখিয়ে নিজ বাড়িতে তার আপন ভাগ্নি পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী (১৩) কে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠে। ঘটনার পরের দিন উক্ত ঘটনা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে গণমাধ্যম কর্মীদের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে যান সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ খোরশেদ আলম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।

পরে ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসার পর জানতে চাইলে, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমি আক্তার, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নিস্তার ফারুক, গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আপন মামা কর্তৃক পাষবিক নির্যাতনের বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ওই শিশু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বর্ণনা দিয়েছে। সে আরো জানিয়েছে, ইতিপূর্বে অনেক বার একইভাবে ভয় দেখিয়ে তার মামা শফিকুল তার উপর নির্যাতন চালিয়েছে।

এসময় উক্ত ঘটনায় মামলা করার বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানতে পারেন থানায় মামলা করতে ভিকটিমের আপন কেউ এলাকায় নেই। শিশুটির বয়স যখন ৩ বছর তখন সিলেটের তার জন্মদাতা পিতার সাথে মায়ের সম্পর্ক ছিন্ন হলে তার মা যশোর শহরে এক ব্যক্তিকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এরপর তার মা বিভিন্ন কারণে ভারতের একটি শহরে চলে যায়।

সে থেকে ওই শিশু মামা শফিকুলের বাড়িতে থেকে এক প্রকার পিতা-মাতাহীন অবস্থায় লেখাপড়া করতে থাকে। অভিযোগ রয়েছে, শিশুটি নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর ধর্ষক মামার বাড়িতে এক প্রকার অবরুদ্ধ অবস্থায় কান্নাকাটি করতে থাকে। জানতে চাইলে, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমি আক্তার বলেন, গতকাল বুধবার দুপুর ২টার দিকে নির্যাতনের শিকার মেয়েকে সাথে নিয়ে জিম্মাদাতা মামা তরিকুল, তার মা ও সৎ পিতা এবং সদর ইউপি চেয়ারম্যান নিস্তার ফারুকসহ কয়েকজন তার দপ্তরে আসেন।

কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ ওই ভিকটিম ও তার মাসহ কয়েকজন সুর পাল্টিয়ে দাবী করেন তাদের মেয়ের কোন ক্ষতি হয়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান স্যারকে। মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, এখনও পর্যন্ত উক্ত ঘটনায় কেউ মামলা করতে আসেনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71