সনামগঞ্জে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার তাহিরপুর প্রতিনিধি হাবিব সারোয়ার আজাদের ছেলে সিহাব সারোয়ার শিপু (২৫) ও তার দুই সহযোগী জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন দুধের আউটা গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে সাব্বির আহমেদ (২৪), একই গ্রামের আইনাল হকের ছেলে জাকারিয়া আহমেদ (২৫) মসজিদের তালা ভেঙ্গে মোটর সাইকেল চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি তাদেরকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে থানায় সোপর্দ করার পর মামলা নং-২৩ দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় মামলাটি দায়ের করেন উদ্ধারকৃত মোটর সাইকেলের মালিক উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামের আব্দুল কাইয়ুম।
এঘটনার পর থেকে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। কারণ মামলা তুলে নিয়ে আপোস করার জন্য বাদীকে সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজ সিন্ডিকেডের সদস্যরা বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে জানাগেছে।
থানায় দায়েরকৃত মামলাসহ এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়- দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন যাবত হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তার ছেলে সিহাব সারোয়ার শিপু সীমান্ত এলাকায় সোসদের নিয়ে সিন্ডিকেড তৈরি করে কয়লা,মাদক,অস্ত্র,বিড়ি ও গরু পাঁচার করাসহ ৩০-৩৫জন লোক দিয়ে যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে প্রতিরাতে লক্ষলক্ষ টাকার বালি বিক্রি করে ইতিমধ্যে হয়েগেছে কোটিপতি।
এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তারপরও আইনগত কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। কিন্তু হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তার ছেলে সিহাব সারোয়ার শিপুর চুরি,চাঁদাবাজি,মাদক ও অস্ত্র বাণিজ্যসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ে প্রতিবাদ ও পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের কারণে মিথ্যা মামলা-হামলাসহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন-দৈনিক সমকাল পত্রিকার তাহিরপুর প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম,দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার তাহিরপুর প্রতিনিধি আলম সাব্বির,দৈনিক সংবাদ পত্রিকার তাহিরপুর প্রতিনিধি কামাল হোসেন,দৈনিক ঢাকা টাইমস পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম,দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার সাবেক জেলা প্রতিনিধি রাজু আহমেদ রমজান,মাইটিভি ও দৈনিক মানবকণ্ঠ পত্রিকার সাবেক জেলা প্রতিনিধি মোজাম্মেল আলম, হাবিব সারোয়ার আজাদের আপন ছোট ভাই দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার তাহিরপুর প্রতিনিধি সাজ্জাদ হোসেন শাহসহ এলাকার আরো শতশত নিরীহ মানুষ। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর পোস্টার আগুনে পুড়ানোসহ মর্তি ভাংচুর করা ও চাঁদাবাজি,মাদক ব্যবসা নিয়ে হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তার ছেলে সিহাব সারোয়ার শিপুর বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে ৮ থেকে ১০টি মামলা হয়। তাছাড়া সীমান্তের চাঁনপুর,বাদাঘাট বাজার,লাউড়গড় ও বড়ছড়া এলাকায় চাঁদা উত্তোলন করতে গিয়ে আজাদ মিয়া গণধৌলাই খেয়েছে ৫ বার। এসব বিষয় নিয়ে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা অফিসসহ জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের নিকট অনেক বার দেওয়া হয়েছে লিখিত অভিযোগ।
এতকিছুর পরও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানিয়েছেন নির্যাতিত সাংবাদিকরাসহ ভূক্তভোগী এলাকাবাসী। সীমান্তের টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন মসজিদের তালা ভেঙ্গে মোটর সাইকেল চুরি করে নেত্রকানা পালিয়ে যাওয়ার পথে দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি হাবিব সারোয়ার আজাদের ছেলে সিহাব সারোয়ার শিপুসহ তাদের সিন্ডিকেডের আরো দুই সহযোগী সাব্বির আহমদ ও জাকারিয়া আহমদকে হাতেনাতে বিজিবি গ্রেফতার করে। এরআগে মাদক সেবন করে চাইনিজ কুরাল নিয়ে সিহাব সারোয়ার শিপু ও তার সহযোগীরা টেকেরঘাট স্কুল এন্ড কলেজের ক্লাস রুমের ভিতরে প্রবেশ করে ছাত্রদের ওপর হামলা করে। পরে গোপন সালিসের মাধম্যে ঘটনাটি সমাধানের নামে ধামাপাচা দেওয়া হয়। এছাড়াও সিহাব সারোয়ার শিপু অস্ত্র ও ইয়াবাসহ সিলেটে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। তাদের সোর্স কালাম মিয়াকে ইয়াবাসহ একবার গ্রেফতার করাসহ জিয়াউর রহমান জিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা ও লেংড়া বাবুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও চুরির মামলা হয়েছিল। আর অন্যান্য সদস্যরা এখনও রয়েছে আইনের আওতার বাহিরে।
তারা প্রতিদিনই সীমান্তের জংগলবাড়ি,লামাকাটা,লালঘাট,বাঁশতলা,লাকমা,টেকেরঘাট, রজনীলাইন,চাঁনপুর,রাজাই,বারেকটিলা ও লাউড়গড় এলাকা দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে কয়লা,মাদক, গরু ও অস্ত্রসহ মোটর সাইকেল পাচাঁর করছে। এব্যাপারে বাদাঘাট সেতু বন্ধন লাইব্রেরী ও আবুল হোসেন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্টাতা আবুল হোসেন বলেন-সিহাব সারোয়ার শিপুর মতো ছেলে একদিনে মোটর সাইকেল চোর হয়নি।
তার বাবার অন্যায় কাজ-কর্ম ও পারিবারিক ভাবে সঠিক শিক্ষা না পাওয়ার কারণে বাবার শিখানো পথে চলতে গিয়েই অবুঝ শিপুর জীবনটা নষ্ট হয়ে গেছে। টেকেরঘাট গ্রামের বাসিন্দা নজরুল মিয়া ও মোটর সাইকেল মালিক আব্দুল কাইয়ুমসহ আরো অনেকে বলেন-মসজিদ হচ্ছে আল্লাহ ঘর। যেখানে আসলে মানুষের মন সুন্দর হয়ে যায়। কিন্তু দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রতিনিধি হাবিব সারোয়ার আজাদের ছেলে সিহাব সারোয়ার শিপু তার সহযোগীদেরকে নিয়ে মসজিদের তালা ভেঙ্গে মোটর সাইকেল চুরি করে নিয়ে যায়
। এটা ভাবলে আমাদের লজ্জা হয়। আমরা তাদের কঠিন শাস্থি চাই। তাহিরপুর উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন- হাবিব সারোয়ার আজাদের ছেলে সিহাব শিপু মোটর সাইকেল চুরি করে পালানোর সময় বিজিবি হাতে গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আমরা খুবই লজ্জিত। তবে আজাদকে সবাই মিলে অনেক বুঝিয়েছি সে যেন অন্যায় কাজ বাদ দিয়ে ভাল হয়ে চলা ফেরা করে। তবে জেলা ও উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদেরকে হাবিব সারোয়ার আজাদ বলেন- তার ছেলে সিহাব সারোয়ার শিপু মোটর সাইকেল চুরি সাথে জড়িত না,পরিকল্পিত ভাবে তার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। এব্যাপারে তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ বলেন- চুরির মোটর সাইকেলসহ বিজিবি হাতে আটক হওয়া ৩জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়নি এবং থানা হাজতে না রেখে আমার হেফাজতে রেখেছি।