পটুয়াখালীর গলাচিপায় সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য জেলেদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও প্রস্তুতি নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আগামী ৪ নভেম্বর রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে মৎস্য অবরোধ। অবরোধের কারণে কষ্টে জীবন যাপন করছেন সমুদ্র উপকূলীয় গলাচিপা উপজেলার জেলেরা। দীর্ঘদিন মাছ ধরা থেকে বিরত থাকা জেলে পল্লীতে চলছে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ায় ব্যাপক প্রস্তুতি।
উপজেলার বিস্তৃর্ণ জেলে পল্লী গুলোতে কর্মব্যস্ত দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। উপজেলার পানপট্টি, বদনাতলী, বোয়ালিয়া খেয়াঘাট, পক্ষিয়া, হরিদেবপুরে জেলেরা মাছ ধরার ট্রলার মেরামত করছেন। জাল কেনা ও সেলাইয়ের কাজেও ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। গলাচিপা উপজেলা ফিসিং ট্রলার মাঝি মোসলেম প্যাদা জানান, ‘গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার ছাড়া আর কোন পেশায় তার অভিজ্ঞতা নেই।
তাই অবরোধকালীন সময়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে। অপেক্ষায় ছিলেন ভরা মৌসুমে ইলিশ শিকারের মাধ্যমে পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে। সরকারের দেয়া অবরোধ মেনে সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যান নি। অবরোধ শেষ হতে আর এক দিন বাকি। এই সময়ের মধ্যে সবকিছু গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। যদিও এখন জালের দাম কিছুটা বেশি। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কেউ পুরানো জাল বুনছেন, কেউবা নতুন জাল প্রস্তুত করছেন।
কেউবা পুরানো নৌকা বা ট্রলার মেরামত করছেন। আবার কেউবা তৈরি করছেন নতুন ট্রলার। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের জেলে পল্লী এবং উপজেলা মৎস্য আড়ৎগুলোতে ইলিশ মৌসুমকে ঘিরে চলছে ট্রলার মালিক, জেলে এবং আড়ৎদারদের মহা ব্যস্ততা। ট্রলার মালিক, আড়ৎদার, জেলে সমিতি সূত্র জানা গেছে, চলতি বছর গলাচিপা উপজেলার কাটপট্টি ও হরিদেবপুর খেয়াঘাটে ৪০টি ট্রলার নির্মিত হয়েছে। কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেন, গত বছর সমুদ্রে প্রচুর ইলিশ ধরা পরায় মৎস্য ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরা লাভবান হয়েছে। তাই এ বছর অনেক ব্যবসায়ী তার ব্যবসা বাড়িয়েছে এবং অনেকেই নতুন ব্যবসা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু নতুন ট্রলার ঘাটে নোঙ্গর করা হয়েছে।
চলতি ইলিশ মৌসুমে এসব ট্রলার মাছ শিকারের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। গলাচিপা উপজেলা মৎস্যজীবি লীগের কোষাধক্ষ্য মো. নুর হোসেন প্যাদা বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী রাস্ট্রের সাথে সমন্বয় করে ভবিষ্যতে সমুদ্রে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ জেলেদের প্রণোদনা দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি। গলাচিপা মৎস্য আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. চুন্নু মিয়া বলেন, অবরোধ শেষে আশা করছি এ বছর সাগরে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে। এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, সরকারের নির্দেশক্রমে অবরোধ শেষ হবে ৪ নভেম্বর রাত ১২ টায়। আমরা আশাবাদী জেলেদের জালে প্রচুর বড় ইলিশ মাছ ধরা পড়বে।