আগামী চার মাসে করোনা ভাইরাস শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই কেড়ে নিতে পারে ৮১ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ। দেশটিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিল আগামী জুন মাস পর্যন্ত বাড়তেই থাকবে।
এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিন-এর এক গবেষণায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিন-এর গবেষণায় দেখা যায়- এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহের দিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে। যদিও এই সংখ্যা এখনই সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে জুলাই পর্যন্ত মৃত্যুর মিছিল না থামলেও জুনের শেষদিকে মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন অন্তত ১০ জন করে কমতে পারে বলে মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষক দল।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিন তাদের গবেষণার কাজে সরকার ও হাসপাতাল ছাড়াও নানা জায়গা থেকে তথ্য নিয়ে এসব ফলাফল প্রকাশ করেছে। তাদের গবেষণা বলছে, আমেরিকায় কমপক্ষে ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এই সংখ্যা পৌঁছাতে পারে ১ লাখ ৬২ হাজার পর্যন্ত।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের একেক রাজ্যে ভাইরাসের সংক্রমণের মাত্রা ভিন্ন হওয়ার কারণ এখনো খুঁজে পায়নি বলে জানিয়েছেন গবেষণা দলের প্রধান ড. ক্রিস্টোফার মুরে।
তিনি জানান, ভাইরাসের লম্বা সময় বেঁচে থাকার কারণে সামাজিক দূরত্ব ও কোয়ারেন্টিনের মতো পদক্ষেপের সময়সীমা আরও বাড়ানো জরুরি। তবে যুক্তরাষ্ট্র স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে যদি করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা ও আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখা যায়।
গবেষণায় আরও বলা হয়, এই সময়ে হাসপাতালগুলোর ওপর দিয়ে বেশ ধকল যাবে। আমেরিকায় মহামারি চরম আকারে পৌঁছালে হাসপাতালগুলোয় অন্তত ৬৪ হাজার বেডের স্বল্পতা দেখা দেবে। সে সময় কমপক্ষে ২০ হাজার ভেন্টিলেটর অতিরিক্ত দরকার পড়বে। নিউইয়র্কের মতো রাজ্যগুলোয় এখনই ভেন্টিলেটরের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে।
ড. মুরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় সব কম গতিতে ভাইরাস ছড়াচ্ছে। তবে এপ্রিলের মাঝামাঝি কিংবা শেষভাগে সেখানে করোনার ধাক্কা বেশ জোরেশোরে লাগতে পারে। এই ধাক্কা সামলাতে এখনই কোয়ারেন্টিনের মতো পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, লুসিয়ানা আর জর্জিয়া তাদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার পদ্ধতির কারণে পস্তাবে।
এক বিবৃতিতে ড. মুরে বলেন, ‘করোনা ভাইরাস তার কেন্দ্রস্থল পাল্টে ফেলবে এবং এটি আরও বাজেভাবে সংক্রমণ শুরু করবে যদি মানুষ সামাজিক দূরত্বের মতো পদক্ষেপগুলোকে হালকাভাবে নেয়।’
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়-এর তথ্য অনুযায়ী ৯৭ হাজার ২৮ জন নিয়ে বিশ্বে এই মুহূর্তে করোনায় আক্রান্তের দিক দিয়ে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৪৭৫ জন।