পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের আটখালী, ডাকুয়া, হোগলবুনিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
এতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি ও সাংবাদিক প্রয়াত আলতাফ মাহমুদের কবরস্থান রামনাবাদ নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। নদী ভাঙনে যেকোনো সময় কবরটি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নদী থেকে কবরের দূরত্ব মাত্র ১০০ ফুট। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে এই সাংবাদিকের শেষ চিহ্নটুকুও হারিয়ে যাবে বলে এলাকাবাসী ও স্থানীয় সংবাদকর্মীরা মনে করছেন।
প্রয়াত সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের নাতি ডাকুয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, পরপর ৩ বার নদী ভাঙনে বাড়িঘর লইয়্যা গ্যাছে।তিনি আরো বলেন, রামনাবাদ আমাদের সবকিছু লইয়া গ্যাছে। আর একবার নিলে আমাদের আর মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকবে না। ফের যেকোনো সময় নদীগর্ভে বাড়িঘর বিলীন হওয়ার কথা বলেন তিনি।
এছাড়া ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, আটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আটখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আটখালী বাজারের শত শত দোকান ঘর, বসতঘর ও ফসলি জমি ভাঙনের মুখে রয়েছে বলে জানান আটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও গলাচিপা প্রেসক্লাবের সভাপতি সমিত কুমার দত্ত মলয়।
অন্যান্য বছরের তুলনায় নদীর পানির স্তরও স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক ফুট বেড়ে গেছে। এ কারণে নদীর ভাঙন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় তীব্রতর রূপ ধারণ করেছে। নদীর সর্বনাশা ভাঙন গলাচিপাবাসীর চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। নদীর করাল গ্রাসে বাদ যাচ্ছে না কিছুই।
এছাড়া বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর ভাঙনের ফলে দক্ষিণ পানপট্টি বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরকাজল গ্যাস ফিল্ড, পাউবো’র বেড়িবাঁধ, ডানিডার পাকা সড়কসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এস এ জরিপের নকশা অনুযায়ী পানপট্টি ইউনিয়নের মানচিত্র বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর করাল গ্রাসে অর্ধেকে পরিনণ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ডাকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান বদরুল ইসলাম বাদল খান জানান, বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি আলতাফ মাহমুদের কবরস্থান রক্ষার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। সরকার যেন অতি দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেন।
পানপট্টি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানান, বোর্ড স্কুল সংলগ্ন এলাকার বেড়িবাঁধ যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হতে পারে।গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশীষ কুমার জানান, গলাচিপা উপজেলার যে সকল এলাকা ভাঙন কবলিত ওইসব এলাকাকে সুনির্দিষ্ট করে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। বিশেষ করে সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের কবর স্থানকে রক্ষা করার জন্য পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।