সারাদেশে ১১ হাজারের বেশি চিকিৎসকের পদ শূন্য: সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেছেন, ঢাকায় ওএসডি চিকিৎসকের সংখ্যা বেশি। ঢাকার বাইরে ফরিদপুরে ২৭৮, গাজীপুরে ১২৫, গোপালগঞ্জে ২৮৩, কিশোরগঞ্জে ২৩৭, মাদারীপুরে ৪২, মানিকগঞ্জে ২১৪, মুন্সীগঞ্জে ৯১, নারায়ণগঞ্জে ৫৩, নরসিংদীতে ৫২, রাজবাড়ীতে ৭৪, শরীয়তপুরে ৭৮, টাঙ্গাইলে ৯০, জামালপুরে ১৫৬, ময়মনসিংয়ে ৩১১, নেত্রকোনায় ১২০, শেরপুরে ৪৭, বান্দরবানে ৪২, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৭৫, চাঁদপুরে ৫৬, চট্টগ্রামে ৩৪৬, কুমিল্লায় ২২৬, কপবাজারে ১৩৪, ফেনীতে ৪৮, খাগড়াছড়িতে ৩৭, লক্ষ্মীপুরে ৩৪, নোয়াখালীতে ৯৮, রাঙামাটিতে ৬০, বগুড়ায় ২৬৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫০, দিনাজপুরে ৩৩৩, গাইবান্ধায় ৭৬, জয়পুরহাটে ৬১, কুড়িগ্রামে ৯০, লালমনিরহাটে ৬৪, নওগাঁয় ১১৯, নাটোরে ৪৯, নীলফামারীতে ১২৫, পাবনায় ১২৪, পঞ্চগড়ে ৭৬, রাজশাহীতে ২৩৩, রংপুরে ২৬১, সিরাজগঞ্জে ১৬১, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭৩, বাগেরহাটে ১২৪, চুয়াডাঙ্গায় ২১, যশোরে ১২৩, ঝিনাইদহে ৭৭, খুলনায় ৩৯৬, কুষ্টিয়ায় ১০৭, মাগুরায় ৫০, মেহেরপুরে ৪৫, নড়াইলে ৪৯, সাতক্ষীরায় ১৬৫, বরগুনায় ৯৪, বরিশালে ৪৩৮, ভোলায় ৯২, ঝালকাঠিতে ৩৭, পটুয়াখালীতে ১৮৭, পিরোজপুরে ৭৮, হবিগঞ্জে ৫৫, মৌলভীবাজারে ৬৩, সুনামগঞ্জে ১৩১ এবং সিলেটে ৩৩১টি চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে।
সরকারি দলের হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে ৩৯তম বিসিএসে (২য় পর্যায়) নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের বিশেষ ক্ষেত্রে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করার জন্য সংযুক্তির মাধ্যমে পদায়ন করা হচ্ছে। এর চেয়ে নিম্ন কোনো প্রতিষ্ঠানে ৩৯তম বিসিএস (২য় পর্যায়) নিয়োগপ্রাপ্ত কাউকে পদায়ন করা হচ্ছে না। তবে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রয়োজনে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য সংযুক্তির আদেশ বাতিল করে এই চিকিৎসকদের কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে পদায়ন করা হবে।
বিএনপির জিএম সিরাজের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশে অনুমোদনহীন বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান আছে। প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া সাপেক্ষে অনুমোদনবিহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জিএম সিরাজের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা দূর করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলা দায়েরসহ শৃঙ্খলামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকেও কভিড-১৯ বিভিন্ন কার্যক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জবাব চাওয়া হয়েছে। জবাব পর্যালোচনা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কয়েকজন কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে ওএসডি করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারিভাবে বিভিন্ন নির্দেশনার ভিত্তিতে শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।
সরকার কোভিড পরীক্ষার সক্ষমতা বৃদ্ধি ও এ সংক্রান্ত জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে পিসিআর পরীক্ষার পাশাপাশি অন্যান্য আধুনিক ও দ্রুত সময়ে পরীক্ষার পদ্ধতি দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কম হওয়ার কারণে মানুষ বেশি বেশি পরীক্ষা করতে চাচ্ছে না। এ কারণে দেশে সর্বোচ্চ সক্ষমতার চেয়েও দৈনিক কমসংখ্যক নমুনা সংগৃহীত হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও যুগোপযোগী নেতৃত্বে বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি দেশের মতো বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংক্রমণ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১১৫টি পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। এসব ল্যাবে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ হাজার পিসিআর পরীক্ষা করা সম্ভব। প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানো যেতে পারে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১৩ থেকে ১৫ হাজার পরীক্ষা সম্পন্ন হচ্ছে।