হানিমুনের পর দেশে ফিরে চিত্রনায়িকা তমা মির্জা ও তার স্বামী বাড্ডা থানায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা করেছেন।
যৌতুক, নির্যাতন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে গত ৫ ডিসেম্বর মামলা করেছেন তমা।
অন্যদিকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে গত ৬ ডিসেম্বর মামলা করেন এই অভিনেত্রীর স্বামী হিশাম চিশতী।
কয়েক সপ্তাহ আগে দুবাইয়ে তমা মির্জা ও তার কানাডাপ্রবাসী ব্যবসায়ী হিশাম চিশতী দুবাইয়ে হানিমুন করতে যান।
সেখানকার বেশ কিছু ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। দেশে ফেরার পর থেকে তাদের সম্পর্কে অবনতি হয়। গত ৫ ডিসেম্বর রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যবসায়ী হিশাম সেখানকার রাজনীতিতে যুক্ত। বিবাদের কারণ হিসেবে হিশাম জানান, ২০১৮ সালে তমার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়।
২০১৯ সালের মে মাসে তাঁরা বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন, তমার আগেও দুবার বিয়ে হয়েছিল, যা তাঁরা গোপন করেছেন।
এ ছাড়া তমার পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতাও করে আসছিলেন হিশাম।
হিশাম করোনার সময় অসুস্থ মাকে দেখতে কানাডা থেকে দেশে এসেছিলেন তিনি। এরই মধ্যে স্ত্রী তমাকে নিয়ে দুবাইয়ে হানিমুনেও যান। হানিমুন থেকে ফেরার পর নানা বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে তীব্র বিবাদ শুরু হয়।
হিশাম জানান, তমার আগের দুই বিয়ের খবর জেনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তবু সংসার টিকিয়ে রাখতে সব কিছু মেনে নিয়েছিলেন।
হিশাম চিশতি বলেন, তমাদের একটি স্বর্ণের দোকানের শেয়ার ছিল। আমার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা ধার নিয়ে তাঁরা সেখানে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন।
সেখান থেকে আয় করে তাঁরা সংসার চালাবেন বলে জানিয়েছিলেন।
হিশাম জানান, শুরুতে আপত্তি করলেও তমার চাপে তাঁর পরিবারকে ওই টাকা দিতে তিনি বাধ্য হন। হিশাম বলেন, সেই টাকা দেওয়ার পরও তাঁদের চাহিদা কমেনি। প্রতি মাসে সংসার খরচ বাবদ তাঁরা মোটা অঙ্কের টাকা নিতে থাকেন।
এর বাইরে তমার ভাইয়ের খরচ, বাবা-মায়ের চিকিৎসা, বাসার পোষা কুকুরের খাবার খরচসহ নানা খাতে, নানা অজুহাতে তাঁরা টাকা চাইতেই থাকেন। বাংলাদেশে আসার পর বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে তাঁর কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নেন তমা।
স্ত্রী হিসেবে তিনি শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে থাকতে রাজি হচ্ছিলেন না।
এদিকে তমা মির্জা এসব দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলছেন, আমার আয়ের টাকা কেন আমি আমার পরিবারকে দিই, এটা নিয়ে নানা কথা শুনতে হতো আমাকে। শুধু কি তা-ই, আমাকে কাজ করতেও বাধা দেয় সে। আমার কাছ থেকে টাকা নিতে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করে। তার কাছ থেকে আমার পরিবার টাকা ধার নেবে কেন! কানাডা থেকে দেশে এলে সে তো আমার টাকায় চলে। আমি টাকা না দিতে চাইলে টর্চার করে। তার টর্চারের কারণেই একটা সময় শ্বশুরবাড়ি থেকে আমি বাবার বাসায় চলে আসি।
২০১০ সালে এমবি মানিক পরিচালিত বলো না তুমি আমার ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে রুপালি পর্দায় অভিষেক ঘটে তমা মির্জার। নদীজন ছবির পার্শ্ব-অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেন।
গত বছর কানাডাপ্রবাসী হিশাম চিশতির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। গত বছর একটা লম্বা সময় কানাডায় কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন তমা মির্জা।
বর্তমানে দেশ টিভিতে তমার প্রিয়তমা নামে একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন।