অপি করিম আমার পছন্দের একজন অভিনেত্রী। বাংলাদেশে যে কজন কয়জন শক্তিশালি অভিনেত্রী আছেন, অপি করিম তাদের মধ্যে একজন । তার অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করে। অপি করিমকে আমি ব্যক্তিগতভাবেও চিনি। তার পারসোনালিটি আমার ভালো লাগে।
অপি করিমকে অনেক বেশী অভিনন্দন এই কারণে যে তিনি ৪১ বছর বয়সে মা হয়েছেন। তিনি প্রথমবার মা হলেন।
তিন বছর আগে দুই তিনটি অনলাইন পোর্টালে নিউজ হয়েছিল যেসব অভিনেত্রী মা হতে পারবেন না কখনো এরকম হেডলাইন দিয়ে। সেখানে অপি করিমের নামও ছিল। এধরেনর নিউজ কি যে জঘন্য। কি আর বলব।
দুনিয়ার এত নিউজের বিষয় থাকতে কেন অভিনেত্রী বা গায়িকা বা মিডিয়ার কোন নারীরা এখনো মা হতে পারবেনা সেটা খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নিউজ করতে হবে।
মা হতে না পারা প্রত্যেকটা নারীর জন্যই অত্যন্ত কস্টের, যারা এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে দিন পার করে, একমাত্র তারাই বোঝে, মনের ভেতরে কত যন্ত্রনা। তাই বলে মিডিয়ার নারী জন্য তাদের এই টপিকস এ নিউজ করতে হবে?
এ প্রসঙ্গে আরেকটা কথা বলি, আমরা এত শিক্ষিত হয়েছি, আধুনিক হয়েছি এমন দাবি করি। কিন্তু এখনো ২৩/২৪ পার হওয়া মেয়েদের বাচ্চা হওয়া নিয়ে তীর্যক কথা বলতে ছাড়িনা। মুর্খের মতো বাচ্চা হচ্ছেনা, কেন নিচ্ছে না। ২৫ বছর পার হলেই আর বাচ্চা হবে না। ৩০ হলে তো হবেইনা। ৩০ বছর পার হলে বিয়ে না হলে বা বাচ্চা না হলে সেই মেয়ের জীবনের আর কোন মানে হয়না। এসব কথা বলতে বলতে জীবন অতিষ্ট করে দেয়।
আমাকেও অনেকেই বলতো, এত দেরী করে বিয়ে করতেছো, বাচ্চা হবেনা। যদিও হয় দেইখো কত সমস্যা হয়। হেনতেন,,,। আমি জানিনা রূপকথার ছবি দেখে তারা লজ্জা পায় কিনা।
একটা মেয়ে কবে বিয়ে করবে, সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। কবে সন্তান নিবে সেটাও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। এবং এসব সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার তার ১০০% আছে। এটা নিয়ে মানুষের এত মাথা ব্যাথা কেন?
এসব মানসিকতা থেকে এদেশের মানুষ কবে বের হতে পারবে?? কবে মেয়েরা এসব অসহ্য মন্তব্য থেকে মুক্তি পাবে?? সমাজের মানুষের এরকম দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হওয়া দরকার।