ইসলামে নারী কি পুরুষ সবার জন্যই বিয়ে ফরজ। তবে প্রশ্ন হচ্ছে কোন পুরুষকে কি কোন নারী বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে কি না।এ বিষয়ে ইসলামই বা কি বলছে?
আমাদের প্রচলিত এই সমাজে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে কোন নারী যদি কোন ছেলে অথবা তার অভিভাবকের কাছে যায় বা বিয়ের আগ্রহ প্রকাশ করে তাহলে তাকে বেহায়া বা নিলজ্জ ভাবা হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে ওই নারী কি আসলেই বেহায়া?
ইসলাম বলছে, কোন নারী নিজের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলে সেই নারী বেহায়া কিংবা নিলজ্জও নয়। এটি শরিয়ত সম্মত। ইসলামি শরিয়তের অন্যতম একটি বিষয়। যেমনটি করেছিলেন উম্মাহাতুল মুমিনিন হজরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা। বিশ্বনবি হয়রত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সৎ চরিত্র, দ্বীনদারি ও আমানতদারীতায় মুগ্ধে হয়ে তিনিই তাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন।
বিয়ে একটি সামাজিক চুক্তি। এতে কিছু বিষয় দেখা হয়। এরমধ্যে চারিত্রিক সুন্দর গুণ ও সামাজিক কিছু বিষয় অন্তর্ভূক্ত। আর ইসলাম বিয়ের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর প্রতি জোর তাগিদ দিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো- ‘বিয়ের জন্য নির্ধারিত ব্যক্তির দ্বীনদারি। এ দ্বীনদারিকে বিয়ের জন্য অন্যতম উপকরণ হিসেবে ভাবা হয়।’
তাই কোনো অবিবাহিতা বা স্বামী নেই, এমন নারী যদি কোনো অবিবাহিত কিংবা স্ত্রী নেই এমন পুরুষের দ্বীনদারি ও উত্তম গুণ মুগ্ধ হয়ে তাকে বিয়ে করার আগ্রহ প্রকাশ করে বা অভিভাবকের মাধ্যমে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় তাতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। বরং এটি অতি উত্তম। হাদিসে এসেছে-
হজরত তাবিত আল-বানানী বর্ণনা করেছেন, আমি হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গে ছিলাম। আর তার সঙ্গে তার এক মেয়ে ছিল। হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
এক নারী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে তাকে নিজের (বিয়ের) জন্য প্রস্তাব দিলেন। মেয়েটি বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার কি আমাকে স্ত্রী হিসেবে প্রয়োজন আছে ?
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আমাকে বিয়ে করে নিন।
সরাসরি এ প্রস্তাবে হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর মেয়ে বলল, ‘ছি ! মেয়েটার বিনয়ের কত অভাব! কত বেহায়া সে! কত লজ্জাজনক!
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু (তার মেয়েকে) বলল, সে বরং তোমার চেয়ে ভালো; সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিয়ে করতেচেয়েছে। তাই (সে) নিজের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে।’ (বুখারি)
নারীর প্রস্তাব দেয়ার বিষয়টি সুস্পষ্ট ও পরিষ্কার যে – একজন পুরুষের ধার্মিকতা তথা দ্বীনদারি, সৎগুণ ও সম্মানজনক অবস্থানের কারণে বা ধর্মের প্রতি অনুরাগ দেখে তাকে বিয়ে করার জন্য একজন মেয়ে আগ্রহ প্রকাশ করলে তাতে দোষের বা লজ্জার কোনো কিছুই নেই; বরং এটি নারীর জন্য এক ধরণের উত্তম গুণ।
সতর্কতা
নারীর বিয়ের প্রস্তাবের মাঝে যেন কোনো ফেতনার আশংকা না থাকে সে দিক থেকে সতর্ক থাকতে হবে। ইসলামি শরিয়তের বিষয়গুলো মেনেই শুধু নারী এ বিয়ের প্রস্তাব দেবে বা বিয়ে করার আগ্রহ প্রকাশ করতে পারবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারীকে দ্বীনদারি ও উত্তম গুণ সম্পন্ন পুরুষকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার বা আগ্রহ প্রকাশ করার তাওফিক দান করুন। সৎ,আমনতদারী ও উত্তম গুণ সম্পন্ন ব্যক্তিকে বিয়ের করার তাওফিক দান করুন। গোনাহমুক্ত জীবন লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।