December 23, 2024, 8:05 pm

১২৫টি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স বাতিল

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : Wednesday, December 30, 2020,
  • 133 Time View

আমদানি শুল্ক ফাঁকি রোধ এবং স্থানীয় উৎপাদনখাতকে সুরক্ষার জন্য বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে ঢাকা কাস্টমস ও বন্ড কমিশনারেট বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের অভিযোগে ১২৫টি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স বাতিল করেছে।

এছাড়াও এ ধরনের আরো ৩৬২টি প্রতিষ্ঠান শনাক্ত করা হয়েছে। এগুলোর লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া চলমান আছে। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা ও দায়দেনা নিরূপণের কাজ চলছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে ৯২টির লাইসেন্স বাতিল করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাস্টমস ও বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার শওকত হোসেন জানান, বন্ড লাইসেন্সের অপব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এটা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও জানান, কমিশনের কর্মকর্তাদের বন্ড লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের সময় সংস্থাগুলো পরিদর্শন করতে বলা হয়েছে এবং বন্ড সুবিধা অপব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে।বন্ডের অপব্যবহারের বিশদ উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট।

সম্প্রতি প্রতিবেদনটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে পাঠানো হয়েছে। এ প্রতিবেদনে রাজস্ব আদায়ের চিত্র, বন্ড লাইসেন্স সংক্রান্ত তথ্য, অডিট সম্পর্কিত তথ্য, হোম কনজাম্পশন সম্পর্কিত তথ্য, রাজস্ব বকেয়ার তথ্য, মামলা সম্পর্কিত তথ্য, প্রিভেন্টিভ কার্যক্রম, সংস্কার কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়।

এছাড়া বন্ড অপব্যবহার বন্ধে ৪ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। এগুলো- অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে এক্সপোর্ট জেনারেল মেনিফেস্টো চালু করা; ইপিজেডগুলোতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করা; বিজিএমইএ’র দেওয়া ইউডির (ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন) সংশোধনী অনলাইনে প্রেরণের বাধ্যবাধ্যতা আরোপ এবং বন্ড কমিশনারেটকে ভেঙে অঞ্চলভিত্তিক ২টি বন্ড কমিশনারেট প্রতিষ্ঠা করা।

বন্ড লাইসেন্স বলতে কোনো শুল্ক না দিয়ে কাঁচামাল এবং প্যাকেজিং উপকরণ আমদানির জন্য রপ্তানিমুখী শিল্পগুলিকে দেওয়া সরকারের একটি বিশেষ সুবিধা। রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রপ্তানিমুখী শিল্পকে এ সুবিধা প্রদান করে থাকে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অস্তিত্বহীন সংস্থার নামে বন্ড লাইসেন্স নেন এবং আমদানি করা কাঁচামাল উন্মুক্ত বাজারে বিক্রি করেন। দ্বিতীয়ত, কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কাঁচামাল শুল্কমুক্তভাবে আমদানি করে উদ্বৃত্ত পণ্য উন্মুক্ত বাজারে বিক্রি করে।

আমদানি প্রাপ্যতা নির্ধারণ পদ্ধতির দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই এ কাজটি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা। অনেক প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি আদেশ যৎসামান্য থাকলেও কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে শুধু মেশিনের উৎপাদন ক্ষমতা অনুযায়ী প্রাপ্যতা নির্ধারণ করিয়ে নিচ্ছে। এভাবে আমদানি করা অতিরিক্ত কাঁচামাল তারা খোলাবাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে।

বন্ড কমিশনারেটের প্রতিবেদনের তথ্য মতে, বর্তমানে এই কমিশনারেটের আওতায় ৬ হাজার ৬৮৪টি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের রয়েছে। এর মধ্যে নানা অনিয়মে জড়িত থাকায় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ২ হাজার ৫০৩টির লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। সর্বমোট ৩ হাজার ৬৪০টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত রয়েছে। স্থগিত থাকা ৩৬২টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ নিরীক্ষা ও দায়দেনা নিরূপণের কাজ চলছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে ৯২টি লাইসেন্স বাতিল করার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। ৩ বছরের বেশি সময় অডিট করেনি ৭১৪টি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা নিবন্ধন নম্বর (বিআইএন) লক করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71