সাম্প্রতিক একটি ধর্ষণ ঘটনাকে উপলক্ষ্য করে অনেকেই পুরো ইংরেজি মিডিয়াম শিক্ষাব্যবস্থাকে দোষারো করতে শুরু করেছেন। এ প্রবণতা আগেও দেখা গেছে। বলৎকারের ঘটনা ঘটলে পুরো মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিষদগার করা হয়।এ দেশে ইংরেজি ও মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার শিক্ষাধারা নিয়ে আমাদের সমালোচনা আছে, তাই বলে যে সমস্যার দায়ভার সে পুরো ব্যবস্থার দায়ভার নয়, এটাও স্পষ্ট করে বলার দরকার আছে।
ধর্ষণের ঘটনার সাথে দুঃখজনকভাবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও এক সময় জড়িয়েছিল। আমি সে বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বৎসর পড়াশুনা করেছি। রাজনৈতিক কিছু সহিংসতা বাদ দিলে অত্যন্ত সুস্থ সাংস্কৃতিক আবহে সময় কাটিয়েছি।
জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের কর্মী ছিলাম। একই সাথে ছিলাম সংবাদকর্মী। ক্যাম্পাসের টেলিফোন একচেঞ্জে গিয়ে সংবাদ পাঠিয়ে প্রায় গভীর রাতে নারী সহকর্মী শীলা কবিরের সাথে নির্জন পথে পথে হেঁটে যে যার হলে ফিরতাম।
কখনও সে নিজেকে অনিরাপদ ভেবেছে মনে হয়নি। একইভাবে থিয়েটারে রিহার্সেল দিয়ে বান্ধবীর সাথে নির্জন পথে হেঁটে যে যার হলে ফিরেছি, কখনও সঙ্গী নিজেকে অনিরাপদ বোধ করেছে মনে হয়নি। আর সে সময় মেয়েরা যখন তখন ছেলেদের হলরুমে যেতো। রান্নাবান্না করে খেয়েও আসত। কোনো অভিযোগ কোনো দিন শুনিনি।
মুক্তমঞ্চের মঞ্চ নাটক, ব্যান্ড শো থেকে মধ্যরাতে হল্লা করে ছেলেমেয়েদের হলে ফেরা ছিল খুবই সাধারণ দৃশ্য।বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে ভরসার, নির্ভরতার বন্ধুরা হচ্ছে ব্যাচমেট, ক্লাসমেটরা। ঠিক কী কারণে সে বন্ধুরা অবধি বিপদজনক হয়ে উঠছে সেটা সত্যই অনুসন্ধান করে দেখার বিষয়।
সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানীদের তা দ্রুত অনুসন্ধান করে দেখা দরকার। এই অপরাধ প্রবণতা থেকে আত্মহত্যার বিষয়গুলোকে একইসূত্রে অনুসন্ধান করা দরকার। প্রয়োজনে এ নিয়ে একটি জাতীয় কমিশন করে অনুসন্ধান করা যেতে পারে।ঘটনার পর এলোপাথাড়ি অভিযোগ করে মূল সমস্যাকে ঝাপসা বা আড়াল করে গেলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান পাওয়া যাবে না।
আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষাব্যবস্থার কল্যাণ হোক।