অনেক জল্পনা-কল্পনার পর দেশে আগামী ২৫ জানুয়ারির মধ্যে আসছে করোনার টিকা। দেশে আসার ১ সপ্তাহের মধ্যে টিকা প্রয়োগ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
কিন্তু টিকা নিতে হলে মানতে হবে ছয়টি শর্ত। এ বিষয়ে এক সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে হবে গ্রহীতাকে। সোমবার (১১ জানুয়ারি) কোভিড-১৯ টিকা প্রয়োগ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে টিকা বিতরণ কমিটির সদস্য ডা. শামসুল হক এসব কথা জানান।
ডা. শামসুল হক বলেন, করোনার টিকা নেওয়ার আগে একটি সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে। কারণ যাকে আমরা টিকা দিচ্ছি, তার একটা অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। আমরা একটি সম্মতিপত্র তৈরি করেছি। সেখানে রেজিস্ট্রেশন নম্বর, তারিখ, পরিচয়পত্র ও নাম থাকবে।
তিনি জানান, সম্মতিপত্রে লেখা থাকবে, ‘করোনার টিকা সম্পর্কে আমাকে অনলাইনে এবং সামনাসামনি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই টিকা গ্রহণের সময়, অথবা পরে যেকোনও অসুস্থতা, আঘাত বা ক্ষতি হলে, তার দায়ভার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বা সরকারের নয়।’
আমি সম্মতি দিচ্ছি যে, টিকা গ্রহণ ও এর প্রভাব সম্পর্কিত তথ্যের প্রয়োজন হলে আমি তা প্রদান করবো। জানা মতে, আমার ওষুধজনিত কোনও অ্যালার্জি নেই’—এ বিষয়টিও সম্মতিপত্রে উল্লেখ করতে হবে জানিয়ে ডা. শামসুল হক বলেন, ‘এটা খুবই ইমপর্টেন্ট। কারণ এ বিষয়টি যদি তিনি না জানান, তাহলে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে, তখন আমরাও বুঝতে পারব না।’
টিকা গ্রহীতাকে আরও সম্মতি দিতে হবে যে, ‘টিকাদান পরবর্তী প্রতিবেদন, অথবা গবেষণাপত্র তৈরির বিষয়ে অনুমতি দিলাম। আমি স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে এই টিকার উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অবগত হয়ে টিকা গ্রহণে সম্মত আছি।’
ডা. শামসুল হক বলেন, এ সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে এবং এটা আমাদের কাছে থাকবে।
করোনার টিকা দেশে আসা নিয়ে সৃষ্ট ধ্রুমজাল কেটে যাওয়ার পর বেশ গতি পায় অন্যান্য কার্যক্রম। করোনার টিকা প্রয়োগ বিধিমালায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কখন, কাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হবে টিকা, সেটি জানাতে এ আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সেখানে জানানো হয়, আগামী ২১-২৫ জানুয়ারির মধ্যে ভারত থেকে দেশে আসবে সেরাম ইনস্টিটি্উটের টিকা। প্রথম দফায় দেশে আসবে ৫০ লাখ টিকা। দ্বিতীয় দফায় আসার আগ পযর্ন্ত ২৫ লাখ করে ২ মাসে ব্যবহারের প্রস্তুতি থাকলেও নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫০ লাখ ডোজই ব্যবহার করা হবে প্রথম মাসে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ও অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বক্তব্য দেন।