ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরা শহরের কামাননগর এলাকায় গাছচাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মাপুকুর, গবুরা ও আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের কয়েকটি স্পটে কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। এতে গ্রাম বাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চাউলখোলা এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০০ ফুটের মতো এলাকা ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে।
এছাড়া কামালকাটি ও চন্ডিপুর এলাকায় পানি ওভার ফ্লো হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এছাড়া গাবুরা ইউনিয়নের জেলেখানি ও নাপিতখালী এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে।
আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রকাটি,কুড়িকাউনিয়া, চাকলা, হিজলা, দিঘলাররাইট, কোলা ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকছে বলে নিশ্চিত করেছেন আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা।
এদিকে সাতক্ষীরা শহর,পাটকেলঘাটা,তালা ও কলারোয়ায় গাছ গাছালি ভেঙ্গে ও কাঁচা ঘরবাড়ী ও টিনের চাল উড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ঘণ্টায় ১০০-১২০ কিলোমিটার গতিবেগে বিকেল চারটার দিকে সুন্দরবন উপকূলে সুপার সাইক্লোন আম্পান আছড়ে পড়ে। পরে আস্তে আস্তে আম্পানের গতিবেগ বৃদ্বি পেয়ে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ১৪৮ কিলোমিটার গতিবেগে পূর্বদিক থেকে পশ্চিম দিকে ঝড়হাওয়াটি প্রবাহিত হতে থাকে।
এদিকে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনম আবুজর গিফার জানিয়েছেন,আম্পানের কারণে নদীর পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়ে নদীর প্রবল জোয়ারে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের দাঁতনেখালি, দূর্গাবাটি, পদ্মপুকুর ও গাবুরার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে রেড়িবাঁধ ভেঙে ও অভারফ্লো হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। কাঁচা ও টিনের ঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছ-গাছালি উপড়ে রাস্তা-ঘাট ও বাড়ি ঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে উপজেলার বিভিন্ন সাইক্লোন সেল্টার ও আশ্রয় কেন্দ্রে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ মেট্রিক টন চাউল ও ৪ লাখ নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, ১৪৭টি সাইক্লোট সেল্টার ও ১ হাজার ৬৯৮টি স্কুল কলেজসহ আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ লাখ ৭০ হাজার ১৫০জন মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। জেলায় ১২ হাজার সেচ্ছাসেবকের পাশাপাশি ১০৩ জনের মেডিকেল টিম স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ২৫০ মেট্রিক টন চাউল ও নগদ ১২ লাখ টাকা বরাদ্ব দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি উপকূল এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা ও দুর্যোগ মোকাবেলায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, নোবাহিনী ও কোষ্টগাড নিয়োজিত রয়েছে।