December 23, 2024, 6:34 pm

ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রতিবন্ধী এমাদুল বাঁচতে চায়

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
  • Update Time : Wednesday, June 2, 2021,
  • 143 Time View

পটুয়াখালীর গলাচিপায় একই পরিবারে স্বামী, স্ত্রী ও ছেলে প্রতিবন্ধী। তার ওপর একমাত্র উপার্জনক্ষম পরিবারের প্রধান শারীরিক প্রতিবন্ধী এমাদুল মোল্লা (৩৮) দীর্ঘদিন ধরে দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা করতে গিয়ে জায়গাজমি, ভিটেমাটি ও জীবনের সহায়সম্বল হারিয়ে নিঃশ^ অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে দিন দিন মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছেন এমাদুল।

স্ত্রী নাসিমা বেগম (২৮), ছেলে নিয়াজ ((৯) ও তায়াসিন (৭)। এই নিয়ে এমাদুলের চার সদস্যের পরিবার। স্ত্রী নাসিমা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ও বড় ছেলে নিয়াজ জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। নিজের অবর্তমানে স্ত্রী ও সন্তানদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে প্রতিনিয়ত গুমড়ে মরে এমাদুল। স্ত্রী ও সন্তানদের কথা মনে পড়লেই এ পৃথিবীতে আরও কিছুদিন বাঁচার স্বাদ জাগে এমাদুলের।

তাই এমাদুল বাঁচতে চায় । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহায্য ও সহযোগিতা ছাড়া আর কোন পথ নেই বলে মনে করছেন প্রতিবন্ধী এমাদুল। এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম তার বাড়ি উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের তুলাতলী গ্রামে। তিনি মৃত সোনা মিয়া মোল্লার ছেলে। সরেজমিনে জানা যায়, এমাদুল পেশায় একজন জেলে। নিজের পেশাকে কাজে লাগিয়ে মোটামুটি ভালই চলছিল সংসার। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন এমাদুল।

এ অসুস্থতার কারণেই তার জীবনে নেমে আসে ভয়ঙ্কর কালো অধ্যায়। জন্ম থেকেই ছিলেন না প্রতিবন্ধী। জিহ্বার নিচে ছোট একটি টিউমারের মত ছিল। কিছু খেতে গেলেই গলায় আটকে যেত এবং শ^াসকষ্ট হত। এভাবে কিছুদিন চলার পরে মুখের কথা আস্তে আস্তে বাজতে শুরু করে। ধীরে ধীরে গলার স্বর ছোট হয়ে আসে এবং টিউমারের জায়গায় যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকে।

এরপর তিনি চিকিৎসার জন্য ছুটে যান বরিশালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আবদুর রহিমের কাছে। ডাক্তার তাকে বিভিন্ন ধরনের রক্তের পরিক্ষা দেন। রক্তের রিপোর্টগুলো দেখার পর ডাক্তার তাকে বায়োপসি করার পরামর্শ দেন। পরে ডাক্তার তার জিহ্বার নিচের টিউমারের কিছু অংশ নিয়ে বায়োপসি করার জন্য ঢাকার ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে পাঠান।

বায়োপসি রিপোর্টে ক্যান্সারের জীবাণু ধরা পড়ে। এরপর ডা. আবদুর রহিম তাকে পাঠিয়ে দেন বরিশালের ডা. তড়িৎ সমাদ্দারের কাছে। ডা. তড়িৎ সমাদ্দার তাকে প্রথমে একটি কেমোথেরাপি দেন। একটি কেমো দেয়ার পর ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের ভেলোরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এমাদুল ভারতের ভেলোর যান। পর পর তিন বার সে ভারতের ভেলোরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে তার সহায়সম্বল হারিয়ে ফেলে।

বর্তমানে ক্যান্সারের কারণে তার মুখের নিচের মাড়িতে দাঁত নেই। ওখানের ডাক্তার বলেছেন তার ফুসফুসেও ক্যান্সারের জীবাণু আছে। যার ফলে তাকে আরও কয়েকবার চিকিৎসা নিতে ভেলোরে যেতে হবে। এমাদুল বলেন, ‘এ্যাহনও ভেলোরে যাইয়া ডাক্তার দেহাইতে চাইর-পাঁচ লাখ টাকা লাগবে যাহা আমার পরিবারের পক্ষে সম্ভব না। আমি বাঁচতে চাই। আমি আমার বৌ-পোলা দুইডা লইয়া বাঁচতে চাই। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চাই। যদি প্রধানমন্ত্রী সাহায্য করেন তাইলে আমি বাঁচমু।

’ এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিষ কুমার বলেন, সরকারিভাবে অসহায় রোগীদেরকে সাহায্য দেয়া হয়। আমাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমাদুল আবেদন করলে তা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠিয়ে দেয়া হবে। পরে সেখান থেকে তার জন্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা আসবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71