করোনার কারণে এ বছর সম্পূর্ণ ভিন্ন আবহে কিশোরগঞ্জে ঈদ উল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে প্রায় দুইশ বছরের প্রাচীন দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে এ বছর জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।
এবার সেখানে ঈদুল ফিতরের ১৯৩তম ঈদের জামাত কথা ছিল। প্রতিবছর এই মাঠে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাতে লাখ লাখ মুসল্লি অংশ নেয়। কিন্তু আজ শনিবার সেখানে ছিল কোলাহলহীন শূন্য মাঠ। শুধু শোলাকিয়ায় নয় এবার জেলার কোনো খোলা জায়গায় বা ঈদগাহে ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়নি।
শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত না হলেও জেলা শহরে ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব মাওলানা শামসুল ইসলাম। আজ সোমবার সকাল ৮ টা ও ৯টায় এ মসজিদে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন।
নামাজে শেষে করোনা দুর্যোগ থেকে মানবজাতিকে উদ্ধারের জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। তাছাড়া মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয় মোনাজাতে।
একই সঙ্গে জেলা শহরের প্রাচীন পাগলা মসজিদে অনুষ্ঠিত তিনটি ঈদ জামাতেও বিপুল সংখ্যক মুসুল্লী অংশ গ্রহণ করেন। এ ছাড়াও জেলার সকল মসজিদে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেকটি মসজিদে একাধিক জামাতের আয়োজন করা হয়।
শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী বলেন, ঈদের দিন লাখো মানুষ শোলাকিয়ায় নামাজ আদায় করেন। এখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় করা কঠিন বিষয়। মুসুল্লিদের জীবনের ঝুঁকি ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে শোলাকিয়ার ঈদের জামাত বন্ধ রাখা হয়। ।
২০০ বছরের ইতিহাসে কোনোদিন কোনো দুর্যোগে বন্ধ থাকেনি শোলাকিয়ার ঈদের জামাত। ২০১৬ সালে মাঠের অদূরে জঙ্গী হামলার পরও মুখরিত ছিল শোলাকিয়া। সেদিনও হয়েছে ঈদের জামাত।
জনশ্রুতি রয়েছে, একবার শোলাকিয়া ঈদগাহের প্রথম বড় জামায়াতে সোয়া লাখ মুসল্লী অংশ নিয়েছিলেন। উচ্চারণ বিবর্তনে সোয়ালাখ থেকে সোয়ালাখিয়া, সেখান থেকে বর্তমান শোলাকিয়া নামটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।