(নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা)
‘ক্ষোভে,অভিমানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত খুলনার উপকূলীয় এলাকার মানুষ। আর কোনো প্রলোভন নয়, এবার অস্তিত্ব রক্ষায় হাজারো মানুষ নিজেরাই নেমেছেন বাঁধ মেরামতে। সকাল হলেই কোদাল-খোন্তা নিয়ে সবাই ছুটছেন বেড়িবাঁধে। দুপুরে নদীতে জোয়ার আসার আগ পর্যন্ত একটানা মাটি কাটছেন, বাঁধ উঁচু
করছেন।’
বুধবার সকালে বাঁধ নির্মাণের সময় এ কথা বলছিলেন খুলনার কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিএম শামছুর রহমান।
তিনি বলেন, বাঁধের নাজুক অবস্থা সম্পর্কে আগে থেকেই বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাঁধ ভেঙ্গে লবণ পানিতে বাড়িঘর, ফসল তলিয়ে গেছে। আর একের পর এক দুর্যোগে ভোগান্তিতে পড়ছে এখানকার মানুষ।
জানা যায়, গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে কয়রার বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে কমপক্ষে ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ভূক্তভোগীরা নেমেছেন বাঁধ মেরামতে। কয়েকদিন ধরে কয়রার জোড়সিং, খাশিটানা, আংটিহারা স্লুইচ গেট, গোলখালি, ছোট আংটিহারা বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ করছেন কয়েক হাজার মানুষ। পুরুষের পাশাপাশি হাঁটু সমান কাদাপানিতে দাঁড়িয়ে নারীরাও বাঁধ মেরামতে কাজ করছেন।
কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিএম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ইউনিয়নের দশালিয়া, মাঠবাড়ি, লোকা তিন পয়েন্টে বাঁধ ভেঙ্গে ৮/৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেউ
এখানে আসেনি। গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে একটি বাঁধ আটকাতে সক্ষম হলেও দুটি এখনো উম্মুক্ত রয়েছে। সেখান থেকে জোয়ারের সময় লোকালয়ে পানি ঢুকছে।
তিনি বলেন, দুর্যোগের সাথে বসবাস করা এই এলাকার মানুষের মধ্যে ঈদ আনন্দ এখানে। মানুষের ক্ষোভ-অভিমান যেন মিশেছে বেড়িবাঁধে। তাদের একটাই প্রশ্ন- বেড়িবাঁধ নিয়ে আর কতকাল তাদের ভুগতে হবে।