পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের বিল কচুয়া গ্রামের স্বপন মন্ডল (৫০) এর পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাবার দেয়া দুই শতাংশ জমির উপরে কোনরকম চালাঘর তুলে চলছে তাদের বসবাস। স্থানীয়রা জানান, চিকনিকান্দী ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সুরেন্দ্র মন্ডলের ছেলে স্বপন মন্ডল। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫ জন। স্বপন মন্ডল মানুষের সাথে দৈনিক পানের বরজে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
মাঝে মাঝে কাজ না থাকলে রিক্স চালিয়ে কোন রকমে সংসার চালান। স্বপন মন্ডল জানান, আমার জন্মের পরেই দরিদ্র পরিবারে হাতাশা লেগে রয়েছে। বাবা গরিব হওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও বেশিদূর পড়ালেখা করতে পারি নাই। বাবা অসুস্থ থাকায় আমাকে ধরতে হয় সংসারের হাল। আমার মায়ের মৃত্যুর পরে আমি অনেক অসহায় হয়ে পড়েছি। বাবা আমাকে দুই শতাংশ জমি দিয়েছিলেন। তাতে কোন রকম দোচালা দিয়ে থাকি। ঝড় বৃষ্টির সময় ঘরের মধ্যে পানি পরে।
বাতাস আসলেই ভয় লাগে, মনে হয় এই বুঝি ঘরখানা উড়ে চলে গেল। তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের গরীবদের ঘরের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। আমি একটি ঘর পেলে বাকি জীবনটা আমার একটু সুখে কাটাতে পারতাম। আমার এক ছেলে গলাচিপা সরকারি কলেজে পড়ে এবং এক মেয়ে চিকিনিকান্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। অভাবের সংসারে ওদের পড়ালেখার খরচ পুষিয়ে আমার পক্ষে মনে হয় আর কোনদিন ঘর উঠানো সম্ভব হবে না। স্বপন মন্ডলের স্ত্রী ঠাকুরানী (৪৫) জানান, আমার স্বামীর রোজগারে আমাদের ৫টি জীবন চলে।
থাকি আমার শ^শুরের দেয়া দুই শতাংশ জমিতে খুব কষ্টে। স্বপন মন্ডলের বাবা সুরেন্দ্র মন্ডল (৮৫) জানান, আমার ছেলে স্বপন মন্ডল সংসারের হাল ধরেছে। আমি বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় কাজ করতে পারি না। ছেলেটা খুব কষ্ট করে। আমার ছেলেটাকে যদি সরকারীভাবে একটি ঘর পেত তাহলে আমরা সরকারের কাছে চির ঋণী থাকতাম। এ বিষয়ে চিকিনিকান্দী ছয় নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বাবলু খান বলেন, আসলেই স্বপন মন্ডলের পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সরকারীভাবে তাদেরকে একটি ঘর দিলে পরিবারটির অনেক উপকার হত। চিকিনিকান্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অবণী ভূষণ শীল বলেন, স্বপন মন্ডলের পরিবারটি অসহায় পরিবার। তার থাকার মত কোন রকম ঘর থাকলেও ভাল কোন ঘর নাই। আসলেই সরকারীভাবে ঘরের দাবিদার তারা।
চিকিনিকান্দী ইউপি চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন রিয়াদ বলেন, স্বপন মন্ডলের পরিবার খুব কষ্টে দিন যাপন করছে। অন্য মানুষের সাথে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। সরকারীভাবে স্বপনের পরিবার একটি ঘর পেলে তারা সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারবে।