নিজস্ব প্রতিবেদক বাউফল
ঈদের শুভেচ্ছা তোরন নির্মাণকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফলে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবলীগ কর্মী তাপস দাস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পৌর মেয়র জুয়েল ও একজন সাংবাদিকসহ ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার তাপস হত্যাকান্ডের ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ এমপি আসম ফিরোজ ও মেয়র জুয়েল গ্রুপ পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে। এর আগে নিহত তাপসের বড় ভাই পঙ্কজ চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ৩৫ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে গত সোমবার (২৫ মে) রাতে বাউফল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনায় জড়িত থাকায় মেয়র গ্রুপের দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বিবদমান দু’গ্রুপের পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাউফলের ক্ষমতাশীনদের দলীয় রাজনীতি আর থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে পুরো বাউফল জুড়ে। তাপস হত্যা মামলায় প্রথম আলোর বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি এবিএম মিজানুর রহমানকে আসামি করায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিক সমাজ।
মঙ্গলবার দুপুরে তাপস হত্যার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে পৌর সভার মেয়র জুয়েল।
পৌর সভা মিলনায়তনে জুয়েলের স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মেয়র জুয়েল সমর্থিত পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল লতিফ খান বাবুল।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মানবতার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশনা সম্বলিত ব্যানার বাউফল পৌরসভার উদ্যোগে পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাগানোর কাজ শুরু করা হয়। সেই ব্যানার স্থাপনে নাজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক ৩০/৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বাধা দেন ও ভাঙচুর করেন।
খবর পেয়ে মেয়র জুয়েল ওখানে যান। প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে আসেন।
তারা বিষয়টি নিস্পত্তি করার জন্য বাউফল থানার মধ্যে একটি কক্ষে মেয়র জুয়েল ও চেয়ারম্যান ফারুককে নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠক চলাকালীন সময়ে স্থানীয় এমপি আসম ফিরোজের ভাতিজা কালাইয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে ৩০/৪০ জনের বহিরাগত একটি সন্ত্রাসী দল এসে ফের ব্যানার স্থাপনের বাঁশ ভাঙচুর করে এবং আমার কর্মীদের ওপর চড়াও হয়।
যে দৃশ্য উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা দেখেছেন। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিবেশ শান্ত করে। মনির মোল্লার আগমনের পর তাপস দাস নামে এক ব্যক্তি আহত এবং পরবর্তীতে তিনি বরিশালে মারা যান। বিষয়টি দিনের বেলা ঘটেছে। যার সাক্ষী উপস্থিত পুলিশ ও সাংবাদিকরা।
এদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগ এর পক্ষ থেকে মঙ্গলবার বিকালে দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদার।
বক্তব্যে বলা হয়, দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে জুয়েল বাউফল পৌর সভার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর যুবসমাজের হাতে অবৈধ অস্ত্র তুলে দিয়ে শান্ত বাউফলকে অশান্ত করে তুলেছে। সন্ত্রাসী কার্যকলাপে উদ্বুদ্ধ করছে। যার সর্বশেষ পরিনতি যুবলীগ কর্মী তাপস খুন। খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত তাপসের বড় ভাই মামলার বাদী পঙ্কজ দাস, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও নাজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইব্রাহীম ফারুক, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও কালাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ মনির মোল্লাসহ, উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা-কমী ও কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যনসহ প্রমূখ।
এদিকে এ বিষয় নিয়ে গলাচিপা প্রেসক্লাব সংবাদ সম্মেলন করেছে আরও পড়ুন।