রংপুরের পীরগঞ্জে বিষাক্ত মদপানে সাত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও অসুস্থ্য হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১৫জন।উপজেলার শানেরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম।
তিনি জানান, মৃতরা হলেন- ওই ইউনিয়নের খোলাহাটি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), জেল ফেরৎ মাদক কারবারি নওশা (৫০), রায়তি সাদুল্যাপুর গ্রামের দুলা মিয়া (৫০), বড় পাহাড়পুর গ্রামের জায়দুল হক (৩৫), হরিরাম সাহাপুর গ্রামের লুলু মিয়া (৩০), বড় পাহাড়পুর গ্রামের সেলিম মিয়া (৫০) এবং মিঠাপুকুর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের চন্দন কুমার (৩০)
মঙ্গলবার (২৬ মে) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পীরগঞ্জের ১০ নম্বর শানেরহাট ইউনিয়নে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ বিষয়ে কেউ মুখ না খুললেও নেশা জাতীয় স্পিরিট পানে এমনটা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে শানেরহাট খোলাহাটি গ্রামের ৩ দিন আগের জেল ফেরত আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), বিকালে পাহাড়পুরের জাইদুল হক (৩৫) ও পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের চন্দন কুমারের (৩০) মৃত্যু হয়। এর আগের দিন সোমবার রাতে রায়তি সাদুল্লাপুরের দুলা মিয়া (৫২) এবং হরিরাম সাহাপুরের লাল মিয়া (৩০) নামে আরও তিনজন মারা গেছেন।
ওই ব্যক্তিরাসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ সংঘবদ্ধভাবে শানেরহাট বন্দরে সোমবার রাতে মদপান করে ঈদ উদযাপন করছিল। এতে ওই দিন রাত থেকেই অন্তত ১৫ জন অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাদের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এছাড়াও পীরগঞ্জের ধলাকান্দির খালেক (৫০), আকবর (৪৫) ও মিলন মাস্টার (৫২), কাজীর পাড়ার খোড়া শাহিন (৪২) ও খোলাহাটির ডিস মতি (৩৬) সহ ১৫ জন অসুস্থ্য অবস্থায় বাড়ি ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানান, এরা সংঘবদ্ধ একটি দল। প্রতিনিয়ত শানেরহাট বন্দরে এরা স্পিরিট জাতীয় নেশাদ্রব্য পান করে থাকে। ওই নেশার তেজক্রিয়তার মৃত্যু ও অসুস্থ্যতার ঘটনা ঘটেছে।
এ ব্যাপারে শানেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মন্টু বলেন, সবার মুখে মুখে তো মদপানে ওই লোকেদের মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নিয়মিত মাদক সেবন করত বলে অভিযোগ রয়েছে।
পীরগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র জানান, তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে। ওই ঘটনার অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।