অনলাইন ডেস্ক
কদিন আগেই পৃথিবীর খুব কাছ ঘেঁষেই বেরিয়ে গেছে বিশাল এক গ্রহাণু। প্রায় দুই কিলোমিটার চওড়া পাথরখণ্ডটি কোনোমতে পৃথিবীকে স্পর্শ করলেই পৃথিবীর অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেত বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এবার প্রায় আধ কিলোমিটারের চেয়ে বড় আকারের একটি উল্কা পিণ্ড পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে৷ এই উল্কা পিণ্ডর গতিবেগ ১১ হাজার ২০০ মাইল প্রতি ঘণ্টা৷ এ ব্যাপারে নাসা জারি করল সতর্কবার্তা৷
নাসার খবর অনুযায়ী- ৬ জুন এটা পৃথিবীর সংস্পর্শে আসবে ৷ এম্পায়র স্টেট বিল্ডিংয়ের থেকেও বড় আকারের এই উল্কা পিণ্ড৷
ডেইলি স্টারের রিপোর্ট অনুযায়ী নাসা এই উল্কা পিণ্ডের নাম রক -১৬৩৩৪৮ (২০০২ এনএন৪) ৷ আশা করা হচ্ছে যদি এই গ্রহাণু পৃথিবীর কাছ দিয়ে বেরিয়ে যাবে৷ পিণ্ডটি লম্বায় ২৫০ থেকে ৫৭০ মিটারের মতো ৷ পাশাপাশি এটা ১৩৫ মিটার চওড়া৷
এই উল্কাটি সূর্যের কাছ থেকে পৃথিবীর কক্ষের দিকে আসছে৷ সেন্টার ফর আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজের মত অনুসারে ২১ মে একটি উল্কা পৃথিবীর ভীষণ কাছ দিয়ে গেছে৷ ২০০০-এর বেশি উল্কাকে প্রতি মুহূর্তে নজরে রেখে চলেছে নাসা৷ তবে এই উল্কার থেকে সেভাবে ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা ক্ষীণ।
নাসা-র মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে এই উল্কার পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভবনা ১ শতাংশের চেয়েও কম ৷ তারপরেও এর ওপর কড়া নজর রাখছেন বিজ্ঞানীরা৷ কখনও কখনও মহাকর্ষের কারণে একদম শেষ সময়ে পৃথিবীর কাছে চলে আসে এই ধরনের গ্রহাণু৷
আগামী রবিবার সকাল ৮.২০ নাগাদ এই উল্কাটি যাবে৷ এত বড় আকারের উল্কা এরপর ২০২৪ সালে পৃথিবীর এত কাছ দিয়ে যাবে৷
ন্যাশনাল নিয়ার আর্থ অবজেক্ট স্ট্র্যাটেজি বিভাগের মতে, এক কিলোমিটারের চেয়ে বড় কোনও উল্কা এলেই অ্যালার্ট জারি করা হয়৷ কারণ এত বড় উল্কা যদি পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটায় তাহলে ধ্বংসাত্মক ক্ষতি হতে পারে৷ এর ধাক্কায় ভূমিকম্প, সুনামি, আরও বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় তৈরি হতে পারে৷ ডায়নোসর পৃথিবী থেকে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মূলেও এ ধরনের সংঘর্ষই দায়ী ছিল ৷
এর আগে গত ২৯ এপ্রিল বুধবার সকালে পৃথিবী থেকে প্রায় ৬৩ লাখ কিলোমিটার (৩৯ লাখ মাইল) দূর দিয়ে চলে গেছে বিশাল গ্রহাণুটি। এর আকার মাউন্ট এভারেস্টের প্রায় অর্ধেক। নিরাপদ দূরত্বে থাকায় পৃথিবীতে এর কোনও প্রভাব পড়েনি। তবুও ঘটনার সময় মহাকাশে সতর্ক নজর রেখেছিলেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
১৯৯৮ সালে নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরি প্রথমবারের মতো গ্রহাণুটি খুঁজে পাওয়ায় এর নাম দেয়া হয় ১৯৯৮ ওআর২। সম্প্রতি অবজারভেটরিতে ধরা পড়া এর একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে গ্রহাণুটি দেখতে অনেকটা মাস্কের মতো মনে হচ্ছে।
মহাকাশবিদরা জানিয়েছেন, ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যের কারণেই গ্রহাণুটিকে এমন দেখা গেছে। প্রকৃতপক্ষে সেটি অসংখ্য পাহাড়-পর্বতে ভরা। এ জন্যই তার এমন চেহারা তৈরি হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অন্তত ২০৭৯ সাল পর্যন্ত গ্রহাণুটি নিয়ে মানুষের চিন্তার কিছু নেই। কারণ, এর আগে সেটি আর পৃথিবীর ধারেকাছে ঘেঁষবে না। আর ২০৭৯ সালের দিকে আসলেও পৃথিবী থেকে চাঁদের প্রায় চারগুণ দূরত্ব দিয়ে চলে যাবে সেটি।