বিশ্বকাপ মিশনের প্রথম ম্যাচে হোঁচট খেলেও ঘুরে দাঁড়িয়ে সুপার টুয়েলভে জায়গা করে নিয়েছে টাইগাররা। ঠিক এমন সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মধ্যে শুরু হয়েছে কথা লড়াই।
প্রথম রাউন্ডে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর ক্ষোভ উগড়ে দেন বিসিবি বস। সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেছিলেন, দল হারতেই পারে। কিন্তু অ্যাপ্রোচ তো ঠিক থাকবে। ম্যাচে খেলার অ্যাপ্রোচ, শারীরিক ভাষা কিছুই ঠিক ছিল না। কোনোভাবেই না। প্রথম ৬ ওভারে সুবিধা থাকে। তখন মারতে গেলে উইকেট যাবে, সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু দুটি উইকেট যাবার পর সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ যেভাবে ব্যাটিং করেছে, সেখানেই তো ম্যাচ হেরে গেছি আমরা।
দলের সমালোচনায় ‘আহত’ হওয়া মাহমুদউল্লাহ পিএনজি ম্যাচের পর এসব নিয়ে কথা বলেন। নিজেদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজের চাপা ক্ষোভ আর ধরে রাখতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর চারদিকে হতে থাকা সমালোচনা মূলত মেনে নিতে পারেনি তার দল। বিশেষ করে মিডিয়া এবং খোদ বোর্ড থেকেও তাদের দিকে আঙুল তোলায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবে শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দাবি করেন, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হার নিয়ে সমালোচনা হবে, এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যখন আমাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, বলা হয় সিনিয়রদের স্ট্রাইকরেট কম থাকার কারণে বাংলাদেশ হেরেছে, তখন খারাপ লাগে। সমালোচনা করতে গিয়ে যখন আমাদেরকে ছোট করা হয়, তখন খারাপ লাগে।
খারাপ খেললেও এভাবে সমালোচনা ঠিক নয় বলে জানান তিনি। সেই বিষয়ের জেরে এবার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তীব্র সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন। মাহমুদউল্লাহর বক্তব্য শুনে খুব অবাক হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিসিবি সভাপতির দাবি, তিনি বা বিসিবির কোন কর্মকর্তা কখনোই ক্রিকেটারদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। মাহমুদউল্লাহর ক্ষোভে ফেটে পড়াকে পাপন দেখছেন, স্রেফ ছেলেমানুষি হিসেবে।
একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিসিবি সভাপতি এমন দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, স্কটল্যান্ডের মতো আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশের বিপক্ষে বাংলাদেশ অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে। এমন খেলা অপ্রত্যাশিত। ম্যাচ হারের পর যা বলেছি, আমি এখনো ওই কথায় অনড় আছি।
কমিটমেন্ট ও দলের হার দুটো ভিন্ন বিষয় বলে জানালেন পাপন।
তিনি বলেন, আমি দুটো বিষয়ের কোনো মিল পাইনি। প্রথমটি হলো, সে (মাহমুদউল্লাহ) বলেছে কেউ তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তুললে তাদের খারাপ লাগে। কিন্তু আমি মনে করি কেউই তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। একবারের জন্যও না। আমি তো আমার বক্তব্যে একবারের জন্যও কমিটমেন্ট নিয়ে কোনো কথা বলিনি। আর দ্বিতীয়ত রিয়াদ বলেছে যে, তাদেরকে নাকি ছোট করে কথা বলা হয়েছে। আমার মনে হয় সে এটা আবেগী হয়ে বলেছে।
বিসিবি প্রধান জানান, মাহমুদউল্লাহ তার মন্তব্য ব্যক্তিভাবে নেওয়ায় তিনি আশ্চর্য হয়েছেন।
পাপন বলেন, আমি মনে করি, সে (মাহমুদউল্লাহ) এবং দলের অন্যান্য খেলোয়াড়দের একটা বিষয় বোঝা দরকার, যেমন সে বলেছে, তারাও মানুষ। তবে একই জিনিস বলা দরকার, দলের সমর্থক এবং দর্শকরাও মানুষ। বিসিবিতে থাকা সবাই মানুষ।