সময়টা ভালো যাচ্ছে না টিম ইন্ডিয়ার। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ উইকেটের বিশাল হার। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আট উইকেটে নাস্তানাবুদ। টুর্নামেন্টে বড় ফেবারিটের তকমা গায়ে লাগিয়ে উড়তে থাকা ভারত মাটিতে নেমেছে।
সেমির আগেই যে বিরাট কোহলিরা বাদ পড়ে যাচ্ছেন, এটা মোটামুটি নিশ্চিত। অথচ কে ভেবেছিলেন, কোহলিদের অবস্থা এমন হবে?
অবশ্য একজনের কথা শুনে মনে হতে পারে, কোহলিদের পারফরম্যান্স যে এমন হতাশাজনক হবে, সেটা আগেই বুঝেছিলেন। তিনি আর কেউ নন, ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সাবেক পেস তারকা শোয়েব আখতার।
শোয়েবের মনে হয়েছে, ভারতীয়রা মাঠে খেলার চেয়ে ইনস্টাগ্রামে খেলতে বেশি আগ্রহী, ‘বোলিং বিভাগকে ঠিক করতে হবে। ইনস্টাগ্রামে ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দাও, মাঠে খেলা শুরু করো। দয়া করে নিজেদের মনোযোগ ধরে রাখো। এটা একটা প্যাশন, ফ্যাশন নয়। যেমন বোলিং বিভাগ তোমরা নিয়ে এসেছ, তাতে ম্যাচ জেতা কষ্টকর।’
ভারতের পারফরম্যান্স দেখে যথেষ্টই হতাশ হয়েছেন, তবে শোয়েব আগেই বুঝেছিলেন, প্রতিবেশীদের অবস্থা এমন হবে, ‘এমন অবস্থা হওয়ারই ছিল, আর সেটাই হয়েছে। খুব বাজে খেলেছে তারা। ভারত অনেক বাজে খেলেছে।
মনে হচ্ছিল, ভারত ম্যাচ খেলতেই আসেনি, শুধু নিউজিল্যান্ডই খেলতে এসেছে। ওদের মিডিয়া ওদের ওপর যে চাপ দিচ্ছিল, যেসব কথা বলা হচ্ছিল, আমি নিশ্চিত ছিলাম, ওরা ফাঁসবেই। আর সেটাই হয়েছে। ভারতের বোলিং বিভাগ যথেষ্ট দুর্বল ছিল।’
ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা কোন পরিকল্পনায় খেলতে নেমেছিলেন, আদৌ তাঁদের কোনো পরিকল্পনা ছিল কি না, মাথায় ঢোকেনি শোয়েবের, ‘ভারতের কপাল খারাপ, তারা টস জেতেনি একবারও। টস না জিতে ওদের আরও হতাশা বেড়েছে।
আচ্ছা বুঝলাম, টসে হেরেছে, বলে সুইং হচ্ছিল। তাই বলে এভাবে খেলতে হবে? একজন মারতে যাচ্ছে, আরেকজনও মারতে যাচ্ছে, তৃতীয়জনও মারতে যাচ্ছে। সহজভাবে খেলো না! বুঝলাম না ওদের মনের অবস্থা কী ছিল। সব বলে মারতে চাইছিল তারা। একটু নিউজিল্যান্ডের ওপর চাপ সৃষ্টি করো, আস্তে আস্তে খেলো কিছুক্ষণ! ওরা যেন ভেবেই নেমেছিল নিউজিল্যান্ডকে মেরে মেরে তক্তা বানিয়ে ফেলতে হবে!’
ভারতের ব্যাটিং পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন শোয়েব, ‘রোহিত শর্মা কোথায়? ওকে ওপেনিংয়ে কেন নামান হলো না? ইশান কিষানের মতো বাচ্চাকে ওপেনিংয়ে কেন পাঠানো হলো? হার্দিক পান্ডিয়াকে শেষে বল করতে নিয়ে আসা হলো, শুরুতে আনা কেন হলো না? ভারতের খেলা দেখে মনে হয়নি, তাদের কোনো পরিকল্পনা আছে। আমার কাছে ভারতকে খুব সাধারণ একটা দল মনে হয়েছে।’
বোলিং বিভাগ নিয়েও শোয়েব ছিলেন সমালোচনায় মুখর, ‘বোলিং বিভাগ যথেষ্ট দুর্বল ছিল ভারতের। বুমরা ছাড়া বাকি সবার অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। বরুণ চক্রবর্তীও মোটামুটি বল করেছে, বাকিদের অবস্থা একদমই খারাপ ছিল।’
ফর্মের উন্নতি না ঘটলে আফগানিস্তানের বিপক্ষেও হারতে হবে ভারতকে, এমনটাই মনে করছেন শোয়েব, ‘ভারতের অবস্থা আরও খারাপ হবে, যদি তারা আফগানদের বিপক্ষে হেরে যায়। ভারত যদি নিজেদের ইজ্জত বাঁচাতে চায়, তাহলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তাদের জিততেই হবে। আবুধাবিতে ভারতকে প্রমাণ করতে হবে যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তারা জিততে পারে। আমার যা মনে হচ্ছে, আফগানিস্তান যদি টসে জিতে প্রথমে বল করে, তাহলে ভারতের অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়ে যাবে। আবুধাবিতে ম্যাচ। ওখানের পিচ তো আরও ধীরগতির। ১৫০-২০০ রান করলেও আফগানিস্তান ছাড়বে না আপনাদের। আমার তো মনে হচ্ছে, ভারতের অবস্থা আরও খারাপ হবে।’