December 25, 2024, 6:22 am

প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে নারীদের হত্যা করাই তাদের নেশা।

অনলাইন ডেক্স
  • Update Time : Friday, November 5, 2021,
  • 60 Time View

এক মাসের ব্যবধানে পান্না আক্তার ও লিলি বেগমকে হত্যা করেন আবদুল্লাহ আনসারী মুন্নাসহ আরেকজন ব্যক্তি। প্রেম করে ধর্ষণ শেষে হত্যা করাই যেন তাদের কাছে একটা নেশা। কিন্তু ক্লুলেস এই দুই হত্যাকাণ্ডের কোনও কুল কিনারা করতে পারছিলো না পুলিশ এতদিন। অবশেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) জালে ধরা পড়ার পরেই বেরিয়ে আসতে তাকে দু্ই যুবকের অপরাধ জগৎতের অজানা কথা। কিভাবে নারীদের সাথে প্রেমের অভিনয় করে বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে ধর্ষণ শেষ নারীদের হত্যা করে সেসব উঠে আসে পিবিআইয়ের তদন্তে।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানাধীন সুরগাপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারের পর উদ্ঘাটন করা হয়েছে কুমিল্লা জেলা সদর দক্ষিণ থানার বহুল আলোচিত পান্না আক্তার ও লিলি বেগম হত্যা মামলার রহস্য।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি কুমিল্লার দাউদকান্দির বারকোটা ভূঁইয়া বাড়ির মো. শহীদুল্লাহ ভূঁইয়ার ছেলে আবদুল্লাহ আনসারী মুন্না। তার সঙ্গে একই জেলার কোতয়ালি থানার দুর্গাপুরের মোস্তফার ছেলে দীন ইসলাম দীনু (১৯) নামের আরেকজনকে গ্রেফতা্র করা হয়েছে।

পিবিআই জানিয়েছে, গত ২০ অক্টোবর পান্না আক্তারকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তাকে বিছানার চাদরে মুড়ে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে ফেলে দেওয়া হয়। তার দুটি চোখে আঘাতের চিহ্ন এবং নিচের ঠোঁটে রক্তাক্ত কাটার চিহ্ন, গলায় প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে শক্ত করে মোড়ানো, দুটি ওড়না দিয়ে হাতে এবং দুটি প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে পায়ে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে এ ঘটনায় নিহতের মা মোছা. শরীফা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় গত ২৫ অক্টোবর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে পিবিআই কুমিল্লা জেলা মামলার ছায়া তদন্তকালে সদর দক্ষিণ থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে এবং পরে নিজ উদ্যোগে তদন্তের দায়িত্ব নেয়।

এর আগে কুমিল্লার কোতয়ালি থানাধীন আমতলী গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের মেয়ে লিলি বেগম (২৮) অপহৃত হন। তাকে অপহরণ হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের হলে আদালতের নির্দেশে পিবিআই তদন্তে নামে।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় একটি হত্যা মামলা এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে দায়ের হওয়া মামলা দুটির তদন্তে নামে পিবিআই।

পিবিআই কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল আহমেদ ও পুলিশের পরিদর্শক (এন) বিপুল চন্দ্র দেবনাথ মামলা দুটি তদন্ত করেন।

গ্রেফতার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রায় দুই মাস আগে পান্না আক্তারের মোবাইল নম্বর থেকে আসামির মোবাইল নম্বরে কল এলে তাদের পরিচয় হয়। অভিযুক্ত মুন্নার বিয়ের প্রলোভনে পান্না রাতে তার স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে যান। মুন্না পরিকল্পনা অনুযায়ী, পান্নাকে তার ভাড়া বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পান্নার কাছ থেকে আগের দাবি অনুযায়ী কোনো টাকা না পাওয়ায় মুন্না ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে পান্নার হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ চাদরে মুড়িয়ে রাখে। চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে মরদেহ বস্তাবন্দি করে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে সদর দক্ষিণ থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রামমুখী মহাসড়কের উত্তর পাশে সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজের বিপরীত পার্শ্বে ফেলে দেয়।

এদিকে এক মাস আগে অভিযুক্ত আবদুল্লাহ আনসারী মুন্না তার বন্ধু পারভেজ সঞ্জীবের সহযোগিতায় লিলি বেগমের সঙ্গে প্রেম করে। এই প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে গত ২ সেপ্টেম্বর ২০ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল ফোন ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে জাগরঝিল নামক এলাকায় আসেন লিলি।মুন্না ও দ্বীন ইসলাম একটি মাইক্রোবাসে লিলিকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। পরে নিহতের মরদেহ ফেনী মডেল থানাধীন শর্শদী ইউপির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে জঙ্গলে ফেলে যায়।

ফেনী সদর মডেল থানা পুলিশ গত ১৩ সেপ্টেম্বর লিলির গলিত মরদেহ উদ্ধার করে। ওই দিনই ফেনী সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পরে আবদুল্লাহ আনসারী মুন্না ও দ্বীন ইসলাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে, পারভেজ সঞ্জীবের সহায়তায় লিলিকে অপহরণ করে হত্যা করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71