ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে অসময় বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টি ও জোয়ারের প্রভাবে ডুবে গেছে গলাচিপার বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। এতে কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে গেছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস আমন ধানের ক্ষতি না দেখালেও কৃষকরা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। সংশ্লিষ্ট কৃষক ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানাগেছে।
গলাচিপা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলায় আবাদ যোগ্য মোট জমি ৪২ হাজার ৯৪৬ হেক্টর। এর মধ্যে ৪২ হাজার হেক্টর জমিতেই আমন চাষ হয়েছে। এসব জমিতে প্রতি হেক্টরে উচ্চ ফলনশীল ধান পাঁচ টন এবং স্থানীয় জাতের প্রতি হেক্টরে ৩ থেকে সাড়ে ৩ টন ধান উৎপাদন হয়। জাওয়াদের প্রভাবে যে সকল ধান ক্ষেতের ক্ষতি আশঙ্কা করা হয়েছে প্রকৃত পক্ষে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হবে না বলে তারা মনে করেন। উপজেলা কৃষি অফিস ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে দুই দিনের প্রাথমিকভাবে খেসারী ডালের চাষ দেখিয়েছেন ৫৫০ হেক্টর এতে ক্ষতি হয়েছে বা পানিতে ডুবে গেছে ১১০ হেক্টর। ফেল ডাল চাষ করা হয়েছে ৪৫০ হেক্টর জমিতে ক্ষতি হয়েছে ৯০ হেক্টর জমির। শীতকালীন সব্জি চাষ হয়েছে ৩২০ হেক্টর ক্ষতি ৮০ হেক্টর। সরিষা, ধনিয়া, ভুট্টা, গম আলুর চাষ হয়েছে ১২০ হেক্টর জমির এতে ক্ষতি হয়েছে ৩৩ হেক্টর জমির। অপরদিকে এখন পর্যন্ত বেড়ি বাঁধের বাইরে তরমুজের চাষ হয়েছে ১২৫ হেক্টর এর মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ২৫ হেক্টর জমির। এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস রোপা আমনের চাষ দেখিয়েছেন ২৭ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির। এতে কোন ক্ষতির পরিমাণ দেখানো হয়নি।
সদর ইইউনিয়নের কৃষক হাবিব মাঝি বলেন, আমি ৬০ শতাংশ জমিতে আমন ধান চাষ করছি। ৩০ শতাংশ জমির ধান কাটতে পারছি। দুই এক দিনের মধ্যে বাকি জমির ধান কাটতে চাইছিলাম। বইন্যার প্রভাবে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে আমার ধান ক্ষ্যাত ডুইব্বা আছে। পানি সরানোর চেষ্টা করছি কিন্তু নদীতে পানি বেশি থাকায় ক্ষ্যাতের পানি সরছে না। এহন যে পাকা ধান ক্ষ্যাতে আছে হেইয়া অর্ধেক ঝইররা যাইবে।
গলাচিপা উপশহরের তরমুজ চাষী মাইনুদ্দিন মাতব্বর বলেন,গলাচিপা উপশহরে আমি ২০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করি। কিন্তু শুক্রবার রাতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পায়। শনিবারের বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে আমার তরমুজ ক্ষ্যাতে পানি ঢুকে যায়। এহন নতুন করে আবার সব শুরু করা লাগবে।
এ প্রসঙ্গে গলাচিপা উপজেলা কৃষি অফিসার আরজু আক্তার বলেন, ঘূণিঝড় জাওয়াদ’র খবর পেয়েই কৃষকদের কাছে আমরা বার্তা পাঠিয়েছি। যাদের ধান ৮০
ভাগ পেকে গেছে সেগুলো দ্রুত কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। যা ক্ষতি হয়েছে আশা করি সব অনুকূলে থাকলে সামনের দিকে কৃষকরা তা পুষিয়ে উঠতে পারবে।