সদ্য নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মণপুরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম অজি উল্লাহ (৬০) লক্ষ্মণপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মড়হ গ্রামের মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করতেন।
পাশাপাশি ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
এ ব্যাপারে মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুল কবির জানান, সোমবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কৃষক অজি উল্লাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে এদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নিজ গ্রামে অজি উল্লাহকে পিটিয়ে আহত করা হলে পরিবারের লোকজন তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় ও পুলিশসূত্রে জানা যায়, মহিউদ্দিন চৌধুরী ষষ্ঠ ধাপে গত ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিনা ভোটে ফের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে দলবল নিয়ে অজি উল্লাহর বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটেরও অভিযোগ উঠেছে।
অজি উল্লাহর চাচাতো ভাই মজিবুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মড়হ বাজার থেকে গ্রামের পশ্চিমপাড়া পর্যন্ত একটি রাস্তা নির্মাণের কাজ করছিলেন। রাস্তাটি পাকা হবে, এ জন্য কয়েক দিন ধরে মাটি ফেলে এটি সম্প্রসারণ করা হচ্ছিল। গতকাল সকাল ৯টার দিকে মহিউদ্দিন তাঁর লোকজন নিয়ে রাস্তার এক পাশে থাকা অজি উল্লাহর জমি থেকে মাটি কেটে রাস্তা বড় করার কাজ শুরু করেন। এ সময় অজি উল্লাহ বাধা দিয়ে চেয়ারম্যানকে বলেন, ‘আপনি রাস্তার দুই পাশ থেকে মাটি কাটেন, এক পাশ থেকে মাটি কাটা অন্যায়। ’ এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হলে চেয়ারম্যান সেখান থেকে চলে যান।
মজিবুর বলেন, ‘সকাল ১১টার দিকে মহিউদ্দিন অন্তত ৩০টি মোটরসাইকেল ও অটোরিকশায় করে শতাধিক লোকজন নিয়ে অজি উল্লাহর বাড়িঘরে হামলা চালায়। এ সময় প্রাণে বাঁচতে বাড়ির পাশের ঝোপের মধ্যে লুকান অজি উল্লাহ। সেখান থেকে তাঁকে খুঁজে এনে পিটিয়ে আহত করে চেয়ারম্যান ও তার লোকেরা। অজি উল্লাহ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে চেয়ারম্যান তার লোকজন নিয়ে চলে যায়। পরে আমরা অজি উল্লাহকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ’
হামলাকারীরা বাড়িঘর ভাঙচুর করে ১১ ভরি স্বর্ণালংকার ও অজি উল্লাহর ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর জন্য রাখা সাত লাখ টাকা নিয়ে চলে গেছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।
এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন চৌধুরীর মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।