অনলাইন ডেস্ক
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে গৃহবধূর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়তে ব্যর্থ হয়ে মনের ক্ষোভ মেটাতে মোবাইল চুরির অভিযোগ এনে গৃহবধূর ছেলেসহ দুই কিশোরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগে ইউপি সদস্যসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
উপজেলার সেনগাঁও ইউনিয়নের দেওধা গ্রামের এ ঘটনার ব্যাপারে শুক্রবার রাতে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গৃহবধূ গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, নির্যাতনের ঘটনায় গত ৫ জুন ইউপি সদস্যসহ সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। আসারিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ বলছে, তারা পলাতক রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পীরগঞ্জ উপজেলার দেওধা গ্রামের এক গৃহবধূর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয় ওই এলাকার মোতালেব আলী নামে এক ব্যক্তি। এতে মোতালেবের মনে ক্ষোভ জমে। পরে ক্ষোভ মেটাতে ওই গৃহবধূর কিশোর সন্তান সুমন ও ভাতিজা কমিরুলের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরি অভিযোগ তুলে গত ২২ মে সেনগাঁও ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে এক শালিস বৈঠক বসানো হয়। সেখানে ওই দুই কিশোরকে কুজো করে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় লাঠি দিয়ে নির্যাতন চালানো হয় এবং তা মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয়।
মোবাইলে ধারণ করা নির্যাতনের সেই ভিডিও দেখিয়ে ওই গৃহবধূর কাছে টাকা দাবি করা হয়। টাকা না পেয়ে গৃহবধূকে মারপিট করে তার বাড়ি থেকে একটি গরু তুলে নিয়ে যায় নির্যাতনকারীরা। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ টালবাহানা করে। অবশেষে গত ৫ জুন পুলিশ মামলা রুজু করলেও অজ্ঞাত কারণে আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ ওই গৃহবধূর।
ওই গৃহবধূ আরও অভিযোগ করেন, মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিচ্ছে। অথচ পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না।
এদিকে, বিষয়টি ধামা চাপা দিতে একটি মহল তৎপর বলেও অভিযোগ তার।
সেনগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান গণমাধ্যমকে জানান, এভাবে শিশুদের নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। এর প্রতিকার হওয়া দরকার।
পীরগঞ্জ থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় জানান, মামলা নিতে টালবাহানা করা হয়নি। আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।