পটুয়াখালীর গলাচিপায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী মো. মিজানুর রহমান গাজী (৪০) এর বিরুদ্ধে। জানা গেছে,
গত ৮ বছর আগে উপজেলা আমখোলা ইউনিয়নের উত্তর আমখোলা গ্রামের মো. লাল গাজীর ছেলে মো. মিজানুর রহমান গাজীর সঙ্গে পাশর্^বর্তী রাঙ্গাবালী উপজেলার রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের সেনের হাওলা গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আ. গণি হাওলাদারের মেয়ে মোসা. মাহফুজা বেগম (৩৫) এর সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়।
বিয়ের পর হতে মাহফুজা বেগমের বাবার বাড়ি হতে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে স্বামী ও তার পরিবার। মাহফুজা বেগমের বাবা-মা না থাকায় গরীব খালুর কাছ থেকে যৌতুক বাবদ টাকা আনতে অস্বীকার করলে স্বামী মিজানুর রহমান গাজী, শ্বশুর লাল গাজী, শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম দলবদ্ধ হয়ে প্রায়ই গৃহবধু মাহফুজা বেগমের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। গত (১১ মে) বৃহস্পতিবার মাহফুজা বেগমের খালুর কাছ হতে টাকা আনতে পূনরায় চাপ সৃষ্টি করে।
মাহফুজা বেগম টাকা আনতে অস্বীকার করিলে স্বামী মিজানুর রহমান গাজী তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথারি মারপিট করে শরীরে বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এতে তার পা বাম পায়ে গুরুতর জখম হয় এবং মাথায় আঘাত লাগে। মাহফুজা বেগমের ডাক চিৎকারে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, আমার চিকিৎসাধীনে মাহফুজা বেগম দ্বিতীয় তলায় ১৬ নম্বর বেডে ভর্তি আছে। তার বাম পা ভেঙ্গে যায় এবং মাথায় ৪টি সেলাই আছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে কালো কালো দাগ আছে।
এ বিষয়ে মাহফুজা বেগমের খালু মো. আলী আজগর মিস্ত্রি (আজু মিস্ত্রি) বলেন, আমার ভায়রার মেয়েকে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা কাবিনে মিজানুর রহমান গাজী বিবাহ করেন। বিবাহের পর থেকেই আমার ভায়রার মেয়েকে প্রায়ই মারধর করে। গত বৃহস্পতিবার আমার ভায়রার মেয়েকে বেধম মারধর করলে স্থানীয়রা আমার ভায়রার মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করে। ওর বাবা ও মা কেউ নেই। আমি প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে মোসা. মাহফুজা বেগম বলেন, আমার স্বামী মিজানুর রহমান গাজী প্রথম স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদের পর গত আট বছর পূর্বে তার সাথে আমার বিবাহ হয়। সে ব্যবসা করবে বলে জানায়। আর তার জন্য যৌতুকের টাকা দিতে বলে। আমি টাকা কোথায় পাব বললে সে তার বাবা মায়ের কুপরামর্শে আমাকে মারধর করে। এ বিষয়ে মিজানুর রহমান গাজীর মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। গলাচিপা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমআর শওকত আনোয়ার বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে মাহফুজা বেগম বাদী হয়ে গলাচিপা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোমবার মামলা করবেন বলে জানান।