December 23, 2024, 3:42 pm

গণকমিশনের অর্থের উৎস খুঁজতে দুদকে ১১ আলেমের স্মারকলিপি

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : Monday, May 23, 2022,
  • 88 Time View

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্ত কমিশন গণকমিশনের অর্থের উৎস ও দুটি সংগঠনের সদস্যদের সম্পদের অনুসন্ধানের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) স্মারকলিপি দিয়েছেন ১১ জন আলেম। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দুদকের সচিব মো. মাহবুব হোসেনের কাছে তাঁরা এই স্মারকলিপি দেন। পীর মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলে আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক কালচারাল ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো নাজমুল হক, সদস্য আবু জাফর কাসেমী, মনসুরুল হক, আবুল কাশেম আশরাফী প্রমুখ।

ইসলামিক কালচারাল ফোরাম বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা দেওনার পীর মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ১১ জনের একটি প্রতিনিধিদল স্মারকলিপি দিতে দুদকে যায়। মিজানুর রহমান চৌধুরী হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির।
স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার সময় মিজানুর রহমান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, গণকমিশন ১১৬ জন আলেম ও ইসলামি বক্তা এবং সহস্রাধিক মাদ্রাসার বিরুদ্ধে দুই হাজার পৃষ্ঠার যেসব অভিযোগ এনেছে, এর কোনো ভিত্তি নেই। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, এটি একটি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে নষ্ট করার চেষ্টা। এর মাধ্যমে তারা এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চায়। এর একটি হচ্ছে, আড়াই বছর ধরে আলেমরা মাঠে নেই। এখন তাদের উসকানি দিয়ে মাঠে–ময়দানে নামানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, সরকারের সঙ্গে একটা সংঘাত সৃষ্টি করে কওমি মাদ্রাসাগুলো বন্ধ করার চক্রান্ত চলছে। ’

মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, গণকমিশনের সদস্যরা জাতিকে যেমন ব্ল্যাকমেইল করেছেন, তেমনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও ব্ল্যাকমেইল করেছেন। ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, এই প্রতিবেদনে কী আছে, তিনি পড়ে দেখেননি। এ ধরনের গণকমিশনের কোনো আইনি ভিত্তি নেই। তিনি অনতিবিলম্বে দুদকে জমা দেওয়া গণকমিশনের প্রতিবেদনটি প্রত্যাহার করার দাবি জানান।

দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ২০০৩ শীর্ষক শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে গণকমিশন। এ কাজে তাদের বিশাল অর্থ ব্যয় হয়েছে। আইনি ভিত্তি নেই, এমন কাজে তাদের অর্থব্যয়ের বিষয়টি স্বাভাবিক নয়। এ অবস্থায় এই সংগঠনের আয়ের উৎস, অর্থের জোগানদাতা এবং আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ইসলামিক কালচারাল ফোরাম মনে করে, গণকমিশনের সদস্যরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তৃতীয় কোনো পক্ষের হয়ে কাজটি করেছে। তাই দুদকের প্রতি অনুরোধ, গণকমিশনের সচিবালয় কাদের অর্থে পরিচালিত হয়, কারা কেমন সুবিধাভোগ করেন, সেখানে সন্দেহজনক লেনদেন হয় কি না, তা খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেবেন।

স্মারকলিপিতে ১৯৯২ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়-ব্যয়ের হিসাব ও তহবিলের উৎস সম্পর্কে অনুসন্ধান এবং কমিটির নেতাদের নামে থাকা সম্পদের উৎস ও আয়-ব্যয়ের হিসাব সম্পর্কে অনুসন্ধান করারও অনুরোধ জানানো হয়।

একই সঙ্গে গণকমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনু, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, মাওলানা জিয়াউল হাসান, কমিশনের সদস্যসচিব তুরিন আফরোজ, সমন্বয়কারী কাজী মুকুল, সদস্য আসাদুজ্জামান বাবু, নাদিয়া চৌধুরী, আবু সালেহ রনি, মাওলানা রফিক হাসান, সৈয়দ নুর আলম, শেখ আলী শাহ নেওয়াজসহ কমিশনের সঙ্গে যুক্ত অন্যদের সম্পদের উৎস, ব্যাংক হিসাব, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ সম্পর্কে অনুসন্ধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

গণককমিশন ১১৬ আলেমের তালিকা দিয়ে যে অভিযোগ করেছে, তাতে দুদকে আসা ১১ জনের মধ্যে কারও নাম আছে কি না, জানতে চাইলে মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘না, আমাদের কারও নাম ১১৬ জনের তালিকায় নেই। ’ তাহলে কি ১১৬ জনের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েই স্মারকলিপি দিয়েছেন? এমন জবাবে মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে আলোচনা করে আসিনি। আমরা সমস্ত কওমি মাদ্রাসা ও ইসলামি শিক্ষার পক্ষে এসেছি। আর যাদের নামে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, তারা তো আমাদেরই সঙ্গীসাথি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71