আরো এক দফায় বেড়েছে ডলারের দাম। বিপরীতে টাকার দাম আরো ৫০ পয়সা কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল সোমবার প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২ টাকা ৫০ পয়সা, আগে যা ছিল ৯২ টাকা।
এর আগে বুধবার ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমানো হয়েছিল।
ওই দিন ডলারের দাম কমিয়ে ৯১ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এর পরের দিনই আবার ডলারের দাম ৫০ পয়সা বাড়িয়ে আগের জায়গায় অর্থাৎ ৯২ টাকা করা হয়।
এর আগের টানা চার কার্যদিবসের প্রতিদিনই বেড়েছে ডলারের দাম। ওই চার দিনে ডলারের দাম বাড়ে তিন টাকা ৪৫ পয়সা। সব মিলিয়ে গত দুই মাসে ডলারের দাম ছয় টাকার বেশি বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন দামে ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে। সরকারি আমদানি বিল মেটাতে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করা হয়। ফলে এটিই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর। এই দরে সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ডলারের বিপরীতে টাকার হিসাব করে থাকে, যা আন্ত ব্যাংক রেট নামে পরিচিত।
ডলারের দাম বাড়ায় একদিকে রপ্তানিকারক ও প্রবাসীরা লাভবান হবেন, অন্যদিকে আমদানিকারকদের খরচ বাড়বে। ব্যাংকের বাইরে খোলাবাজার ডলার কেনাবেচা হচ্ছে ৯৬ থেকে ৯৭ টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলারের দাম বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করছে না। ব্যাংকগুলো যে দামে লেনদেন করে, তার মধ্যে একটি দর বিবেচনায় নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার ৯২ টাকা ৫০ পয়সাকে বিবেচনায় নিয়েছে। এই দামেই ডলার বিক্রি করেছে।
অস্থির ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত ডলারের দাম বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলারের চাহিদা বেশি হওয়ায় ধীরে ধীরে দাম বাড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে রিজার্ভ থেকেও প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে। এভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডলারের বাজার। এই অবস্থায় ডলারের দাম বাজারের ওপর অর্থাৎ চাহিদা-জোগানের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশে একদিকে ব্যাপক হারে আমদানির চাপ বেড়েছে। ফলে আমদানির দায় পরিশোধে বাড়তি ডলার লাগছে। কিন্তু সেই তুলনায় রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়েনি। ফলে ব্যাংকব্যবস্থা ও খোলাবাজারে মার্কিন ডলারের ওপর চাপ বাড়ছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যার কারণে টাকার বিপরীতে বাড়ছে ডলারের দাম।