December 23, 2024, 4:33 pm

৬ বছরের ইয়াসমিন এক যুগ পর স্বামী-সন্তান নিয়ে ফিরল পরিবারে

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  • Update Time : Saturday, June 18, 2022,
  • 62 Time View

ইয়াসমিনের বয়স তখন সাড়ে ছয় বছর। ফুফুর সঙ্গে ঢাকায় বেড়াতে গিয়ে ১২ বছর আগে নিখোঁজ হয়। দিশেহারা হয়ে পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেন ইয়াসমিনকে। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান মেলেনি। একপর্যায়ে তার আশাই ছেড়ে দেয় সবাই। প্রায় ভুলে গিয়েছিল ইয়াসমিনের কথা। এক যুগ পর নিখোঁজ হওয়া সেই ইয়াসমিন পরিবারের কাছে ফিরে এসেছে স্বপ্না হয়ে।

এখন তার বয়স ১৯ বছর। ইয়াসমিনের বিয়ে হয়েছে, আছে ৫ বছরের এক ছেলেসন্তানও। দীর্ঘদিন পর পরিবারের কাছে ফিরে আসায় আবেগাপ্লুত ইয়াসমিন ও তার পরিবার।
শুক্রবার সকালে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের গহিনখালী গ্রামে অবস্থিত নিজ জন্মভূমিতে স্বামী-সন্তান নিয়ে এসে পৌঁছেছেন ইয়াসমিন। হারিয়ে যাওয়া সেই ইয়াসমিনের ফিরে আসার খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা তাদের বাড়িতে করছেন ভিড়। আর পরিবার তাদের হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে পাওয়ায় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে নিজ গ্রামের বাড়ি রাঙ্গাবালী থেকে ইয়াসমিন তার ফুফু মিনারা বেগমের সঙ্গে ঢাকার কেরানীগঞ্জ বেড়াতে যান। ওই ফুফুর বাসা সংলগ্ন বালুর মাঠে খেলতে গিয়ে সে তখন নিখোঁজ হয়। পরে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি। ইয়াসমিনের সন্ধান পাওয়ার পর পরিবার জানতে পারে যে, খেলাধুলা করতে গিয়ে ওই সময় ইয়াসমিন অপহরণ হয়। পরে অপহরণকারীদের কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করে কয়েকজন লোক। সেখান থেকে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের নূরপুর মালঞ্চ গ্রামে বসবাসরত মৃত সিরাজ মন্ডলের পরিবারে আশ্রয় পায় ইয়াসমিন।
সেখানেই সে বড় হয়, কেটে যায় এক যুগ। এর মাঝে তার বিয়েও হয় একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন জামনগরের রাঙামাটি গ্রামের খাইরুল ইসলামের সঙ্গে।

এক যুগ পর নিজ বাড়িতে ফিরে আসা ইয়াসমিন (স্বপ্না) বলেন, ‘আমি ছোটবেলায় ফুফুর সঙ্গে বেড়াতে ঢাকায় যাই। ওই সময় বালুর মাঠে খেলতে গিয়েছিলাম। পেছন থেকে একজন মহিলা মুখ চেপে ধরে আমাকে নিয়ে যায়। এরপর আমি অচেতন হয়ে পড়ি, ওই সময় কী হয়েছে আমি কিছুই বলতে পারি না। পরে নাটোরে একটি পরিবারে আমি বড় হই। প্রায় ১২ বছর পর আমার জন্মদাতা বাবা-মায়ের খবর পাই। তারাই আমাকে রাঙ্গাবালীতে নিয়ে আসছেন। বাবা-মাকে পেয়ে আমার অনেক ভালো লাগছে।’ ইয়াসমিনের জন্মদাতা বাবা ইউসূফ প্যাদা বলেন, ‘আমার মেয়ে যখন হারিয়ে যায়, তখন ওর বয়স ৬ বছর ছয় মাস। ওরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কিন্তু কোথাও পাইনি।

আমার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে হারিয়ে যাওয়া মেয়ের খবর পাই। পরে নাটরে গিয়ে আমার মেয়েকে শনাক্ত করি। তার দুই হাঁটুর কাটা চিহ্ন এবং ছোটবেলার কিছু স্মৃতি শুনে আমি নিশ্চিত হয়েছি যে, সে-ই আমার হারিয়ে যাওয়া মেয়ে ইয়াসমিন। পরে নাটোর সদর আদালতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আবেদন করি। নমুনা দেওয়া হয়। দুই মাস পর আদালতের মাধ্যমে ডিএনএর ফলাফল পাব।’ এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, আমাকে এ বিষয়ে কেউ অবহিত করেনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71