December 24, 2024, 2:12 am

১০২ বছরে গৌরবময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ।

অনলাইন ডেক্স
  • Update Time : Friday, July 1, 2022,
  • 41 Time View

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ। জ্ঞান আহরণ ও বিতরণের গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে ১০২ বছরে পদার্পণ করলো দেশের সর্বপ্রাচীন ও সর্বোচ্চ এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ৩টি অনুষদ, ১২টি বিভাগ, ৬০ জন শিক্ষক, ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী এবং ৩টি আবাসিক হল নিয়ে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাবির পথচলা শুরু হয়েছিল।

শতবর্ষ পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর অনেক বেড়েছে।

বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ৮৩টি বিভাগ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ১৯টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল এবং প্রায় ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।

 

প্রতিষ্ঠার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালির জাতির জন্য শুধুমাত্র শিক্ষিত নাগরিক তৈরি করেনি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বাঙালি জাতির আলাদা পরিচয় ও জাতিসত্তা পরিচয়ের জন্য কাজ করেছে। প্রতিষ্ঠার ত্রিশ বছরের মাথায় দেশের সবচেয়ে বেশি মানুষের ভাষা বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ভাষা আন্দোলনের পরে দেশের মানুষের স্বাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই। তদানীন্তন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মূল টার্গেটে পরিণত হয়েছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়। পুরো পাকিস্তানি সামরিক শক্তির ঘুম হারাম করে দিয়েছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সেই শোধ নিতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে হামলার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বেছে নেয় পাকিস্তানিরা। প্রাণ যায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে জীবিকা নির্বাহ করা অসহায় মানুষেরও। প্রতিষ্ঠার পঞ্চাশ বছরে জাতিকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দেয় এ ঢাবি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে রয়েছে জাতির ঋণ।

এ বিশ্ববিদ্যালয়টি শুধু জাতি প্রতিষ্ঠা করে থেমে থাকেনি। জাতিকে গঠন ও নেতৃত্ব দেওয়ার কাজ করেছে এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় সব প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিচ্ছে এ ঢাবির শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ১০২ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে এক বাণীতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনা মহামারিসহ বৈশ্বিক নানামুখী অভিঘাত মোকাবিলা করে আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণের পথে এগিয়ে চলেছি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রাখা আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

বাণীতে তিনি লেখেন, যুগ ও সমাজের চাহিদা অনুযায়ী গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা, নতুন নতুন উদ্ভাবন, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, মুক্তচিন্তার উন্মেষ ও বিকাশ, সৃজনশীলতার চর্চা এবং নতুন ও মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। কারিকুলাম ও পাঠক্রমের আধুনিকায়ন এবং মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণার প্রতি আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।

গবেষণার সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‌‘গবেষণা-প্রকাশনা মেলা’ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের যোগসূত্র স্থাপিত হবে বলে আশা করছি।

বিশ্বের অন্যতম শেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে উপাচার্য বাণীতে বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশের উন্নয়ন ঘটিয়ে অবারিত জ্ঞান চর্চা এবং নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে- এ আমার বিশ্বাস। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সফলতা কামনা করছি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71