শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইনজীবী প্যানেল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফকে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই অধিদপ্তরের প্যানেলভুক্ত বেসরকারি আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ড. ইউনূসের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে উক্ত অধিদপ্তরের দায়েরকৃত মামলার বেসরকারি আইনী পরামর্শক হিসেবেও কাজ করছিলেন তিনি।
সম্প্রতি গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃক প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিক ও কর্মচারীদের লভ্যাংশ প্রদান সংক্রান্ত দূর্নীতির বিষয়টি প্রকাশিত হবার পর আলোচনায় আসে জাফরুল হাসান শরীফের নাম।
তিনি শ্রমিক ইউনিয়নের আইনজীবী হিসেবে কাজ করা মো. ইউসূফ আলীর অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী। উভয়ে একত্রিত ভাবে ‘এটনীস’ নামক একটি আইনী সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে থাকেন। রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএসের ৩২ নং রোডের ৪৮৭ নম্বর বাসায় রয়েছে এর অফিস।
জানা গেছে, জাফরুল হাসান শরীফ গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে কাজ না করলেও গ্রামীণ শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যাংক একাউন্ট থেকে তার আইনী প্রতিষ্ঠান এটনীসের একাউন্টে ১ কোটি টাকা এবং ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফের যৌথ নামে খোলা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের একটি একাউন্টে ৬ কোটি টাকা প্রদান করা হয়।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক একাউন্টের (একাউন্ট নং-১৮৫৯৮১৪৭৫০১) তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ২৬ মে তারিখে জাফরুল হাসান শরীফ ও মো. ইউসুফ আলীর যৌথ নামে উক্ত একাউন্টটি খোলা হয় এবং ২৯ মে উক্ত একাউন্টে গ্রামীন টেলিকম এমপ্লয়েজ ইউনিয়ন হতে প্রাপ্ত ৬ কোটি টাকার চেক জমা প্রদান করা হয়। একাউন্ট খোলার সময় উভয়েই নিজেদের আইনজীবী পরিচয় গোপন করে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর পরিচয় প্রদান করেন।
আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন না করা স্বত্বেও কেন জাফরুল হাসান শরীফ গ্রামীণ টেলিকম এপ্লয়েজ ইউনিয়ন হতে এতো বিপুল অর্থ লাভ করলেন-এ বিষয়টি প্রশ্ন আকারে দেখা দিয়েছে। কেন তিনি একাউন্ট ওপেনিং ফরমে ভুল তথ্য প্রদান করলেন এটা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। তিনি সরকারি দফতরে প্যানেল আইনজীবী হিসেবে থেকে গোপনে গ্রামীণ টেলিকমকে তথ্য সরবরাহ করতেন কিনা-এসব নিয়ে জোর তদন্তের দাবী উঠেছে।