আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম অভিনয়, প্রযোজনা ও গান নিয়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। তার কাজগুলো প্রকাশ হলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। প্রতিনিয়তই হিরো আলম বিভিন্ন গানের সাথে সুর মিলিয়ে গান করছেন। বেশ কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি আলোচিত হিরো আলমকে জিজ্ঞাবাসাদ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। পরবর্তীতে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান তিনি।
হিরো আলমের সই করা মুচলেকায় লেখা আছে, ‘আমি আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম এই মর্মে মুচলেকা প্রদান করছি যে ভবিষ্যতে আমি চলচিত্র বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে কোনো অশ্লীল কমেডি, অডিও-ভিডিও গান, সংস্কৃতি বা ভাষার বিকৃতি, কোনো নির্দিষ্ট পেশা বা পোশাকের অবমাননা বা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করাসহ মানহানিকর ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করা থেকে বিরত থাকব।
আমার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম থেকে নিজ দায়িত্বে উপরিউক্ত বিষয়ের সকল ধরনের অডিও-ভিডিও কনটেন্ট সরিয়ে ফেলব বা ব্যক্তি উদ্যোগে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করব। ভবিষ্যতে আমি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ বা বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ অপরাধ করব না। এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে আমার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
যেকোনো সময়, যেকোনো অবস্থায় ডিবি পুলিশের তলবমতে ডিবি কার্যালয়ে হাজির হতে বাধ্য থাকব। ভবিষ্যতে আমি আর এ ধরনের কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করব না মর্মে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ, অর্গানাইজড, ক্রাইম-ইনভেস্টিগেশন টিম, ডিএমপি-ঢাকায় মুচলেকা প্রদান করলাম। আমি সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে, বিনা প্ররোচনায় উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে অত্র মুচলেকা প্রদান করলাম। ’
আশরাফুল আলম সাঈদ ওরফে হিরো আলমকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে ডেকে মুচলেকা নেওয়ার ঘটনায় দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও হিরো আলমকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
হিরো আলমের অভিযোগ, গত ২৭ জুলাই পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে আট ঘণ্টা আটকে রাখে এবং মুচলেকা নেয়। পুলিশ বলেছে, তিনি (হিরো আলম) কুৎসিত। তিনি নায়ক হন কী করে। তারা (পুলিশ) তার নাম থেকে হিরো বাদ দিতে বলছে। তার কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে যে তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত গাইবেন না।
এদিকে, বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম হিরো আলমকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ জানায়, কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও একই কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হিরো আলমকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই তথ্য যারা প্রচার করছেন, তারা মিথ্যা বলছেন। তার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ ছিল, তাই তাকে জিজ্ঞাসাদের জন্য ডেকে নেওয়া হয়েছিল। হিরো আলমকে গান গাইতে নিষেধ করা হয়নি, কাউকে যেন বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা না হয়, সেটাই বলা হয়েছে। এ ছাড়া কোনো বিশেষ বাহিনীর পোশাক ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।