টাঙ্গাইলে গভীর রাতে চলন্ত বাস জিম্মি করে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০ জন আসামিকে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে র্যাব। সোমবার (৮ আগস্ট) রাতে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী রতন হোসেনসহ ১০ আসামিকে ডিবির কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) দুপুরে রিমান্ড চেয়ে আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে।
টাঙ্গাইল র্যাব-১২ এর ৩ নম্বর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, সোমবার (৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে রতনসহ গ্রেপ্তার ১০ জনকে ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলে আনা হয়।
এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে রোববার (৭ আগস্ট) তাদের ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার র্যাব-১২ ও ১৪।
র্যাব জানায়, বাসের হেলপারের ছদ্মবেশে ২০১৮ সাল থেকে যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছিল রতন হোসেন (২১)। তিনি এ চক্রের দলনেতা। তার অধীনে ১৩ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় দুই দফা কারাভোগও করেছেন তিনি। দ্বিতীয় দফায় ৯ মাস কারাভোগের পর জামিনে বের হয়ে আসেন এবং পুনরায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি করে দলনেতা হন রতন হোসেন।
এদিকে ঈগল এক্সপ্রেস বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী রতনের বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের ধলপুর গ্রামে। ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের রক্তিপাড়ায় দুর্ঘটনার পর বাস থেকে নেমে ডাকাতরা ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে রতনের নানা বেলো মিয়ার বাড়িতে যায় বলে জানা গেছে। এরপর সকালেই সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে বাড়ির গৃহবধূ জেরিন তিনটি মোবাইলের কভার এবং একটি ছুরি দেখতে পান।
ডাকাত দলের গ্রেফতারকৃত অন্য সদস্যরা হলেন- মো. আলাউদ্দিন (২৪), সোহাগ মন্ডল (২০), খন্দকার হাসমত আলী ওরফে দীপু (২৩), বাবু হোসেন ওরফে জুলহাস (২১), মো. জীবন (২১), আব্দুল মান্নান (২২), নাঈম সরকার (১৯), রাসেল তালুকদার (৩২) ও আসলাম তালুকদার ওরফে রায়হান (১৮)।
এর আগে রাজা মিয়া, আউয়াল ও নুরনবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সব মিলিয়ে এ মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজা মিয়া, আউয়াল ও নুরনবী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এই তিনজন বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে রয়েছেন।
টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতারকৃত ১০ জনকে সোমবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন শেষে রাতে ডিবির কাছে হস্তান্তর করেছে র্যাব। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আসামিদের দুপুরের দিকে রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হবে। এর আগে গ্রেপ্তারকৃত তিনজন কারাগারে রয়েছে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।