রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দকৃত বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির রিলিফের চাল পাচারকালে সুবর্ণচর থেকে ২২ মেট্রিক টন চালসহ দুটি ট্রাক জব্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তবে পালিয়ে গেছে এক ট্রাক ড্রাইভার। নোয়াখালীর হাতিয়ার উপজেলার ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিলো এই চাল।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, সুবর্ণচর উপজেলার চর আমান উল্যাহ এলাকার আবুল খায়েরের ছেলে ট্রাক ড্রইভার মো.শামীম (৩২), চর জুবলি গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে জব্দকৃত চালের মালিক দাবিদার মো. মনির (২৮) ও চর মজিদ গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে ট্রাক ড্রাইভার মো.ওসমান (১৯)।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেব প্রিয় দাস মঙ্গলবার দুপুরে দুই ট্রাক চালসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। এর আগে, সোমবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার ২নং চরবাটা ইউনিয়নের তোতার বাজার ও ৭নং পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের মঞ্জু চেয়ারম্যান বাজার থেকে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির রিলিফের ২২ মেট্রিক টন চাল ভর্তি দুটি ট্রাকসহ তাদের আটক করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় , সোমবার রাতে হাতিয়ার ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্যবসায়ী মনির ও সুবর্ণচরের পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে আবদুর রহমান ওরফে ডিলালের (৪২) যোগসাজশে ট্রলারযোগে কালোবাজারে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দেকৃত ২২ মেট্রিক টন চাল সুবর্ণচরের তোতা বাজার ও মঞ্জু চেয়ারম্যান বাজার ঘাটে নিয়ে আসে। তোতার বাজার মঞ্জু চেয়ারম্যান বাজার সংলগ্ন ঘাটের পাশে খালি জায়গা থেকে চাল লোড করার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে গ্রাম পুলিশ নূর করিম পুলিশকে খবর দিলে ট্রাক এবং আলামতসহ পরিবহন কাজে নিয়োজিত তিন ব্যক্তেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় ট্রাকটির গতিরোধ করতে গেলে চালক চৌকিদার নুর করিমকে চাপা দেয়ার চেষ্টা করে। মঞ্জু চেয়ারম্যান বাজার সংলগ্ন ঘাটে পুলিশের অভিযান টের পেয়ে ওই ট্রাকের ড্রাইভার ডিলার রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে পালিয়ে যায়।
চাল আটককারী গ্রাম পুলিশ মো. নূর করিম জানান, সোমবার বিকালে মেঘনা নদী পার হয়ে হাতিয়া থেকে চালগুলো প্রথমে ভূমিহীন বাজারে আনা হয়। সেখানে বেশ কিছু বস্তা পরিবর্তন করে পাচারকারীরা। এমন একটি সংবাদ ভূমিহীন বাজারের স্থানীয় লোকজন তাকে সোমবার সন্ধ্যায় জানায়।
আটক ট্রাক ড্রাইভার জানায়, চালগুলো পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে সারের ডিলার আবদুর রহমানের। তাৎক্ষণিক আব্দুর রহমানের সঙ্গে স্থানীয় একজন সাংবাদিক মুঠোফোনে আমার সামনে কথা বললে সে জানায়, ভাসানচর থেকে কিছু চাল খাওয়ার জন্য আনার কথা ছিল। সাংবাদিক তাকে দুই ট্রাক চাল আটকের কথা বললে তিনি কল কেটে দিয়ে মুঠোফোন বন্ধ করে দেন। ট্রাক ড্রাইভার জানান, চাল পাচারের সাথে সুবর্ণচরের রহমান ডিলার ও হাতিয়ার মনির জড়িত। নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।