দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা সাফ ট্রফি হাতে নিয়ে ফিরেছে বাংলার মেয়েরা। ছাদখোলা বাসে শুভেচ্ছার বৃষ্টিতে সিক্ত হয়েছেন তারা। বিমানবন্দর থেকে ছাদখোলা বাসে করে তাদের নেয়া হয় বাফুফের ভবনে। এ সময় হিমালয় জয় করা বাঘিনীদের ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ভবনের দুই তলায় সাবিনাদের ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানান।
তবে হিমালয় জয় করে আনা শিরোপা যে ভবনে থাকবে, সেই ভবনে কোনো আলোকসজ্জা করা হয়নি। ব্ড্ড বেরঙিন ভবনে আয়োজন করা হয় এক বিশাল সংবাদ সম্মেলন। কিন্তু ওই সংবাদ সম্মেলনে একটু বসার জায়গা হয়নি চ্যাম্পিয়ন টিমের সেনাপতি সাবিনা খাতুন ও কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের। ঘরে ফিরেই কিনা অবহেলার শিকার দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জেতা মেয়েরা!
সংবাদ সম্মেলনে বসেছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। এদের পেছনে অন্যান্যদের সঙ্গে দাঁড়িয়েছিলেন সাবিনা ও ছোটন। এ ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনা।
নেটিজেনরা বলছেন, যাদের জন্য আজকের এই উৎসবের আয়োজন, যাদের জন্য এই আনন্দের উপলক্ষ্য, তারাই একটু বসতে পারলো না? এ কেমন আয়োজন বাফুফের।
কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটির প্রধান পলাশ মাহমুদ নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লিখেন, ‘কিয়েক্টাবস্থা, সামনের সারির মানুষগুলো অনেক কষ্ট করে খেলে সাফ জিতেছেন। নারী টিমের নতুন মুখগুলোকে অভিনন্দন। ’
চিকিৎসক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আব্দুন নূর তুষার এক পোস্টে লিখেন, ‘কোচকে বসতে দেয়ার সৌজন্যটুকু নাই। খেলোয়াড় মেয়েটি বিষন্ন চোখে দাঁড়িয়ে। বুড়ো ভামগুলো বসে আছে সামনে। চূড়ান্তভাবে অসভ্য একদল লোকজন। আল্লাহ এদের সুমতি দিক। ’
ওয়ালিউল সাকিব নামে এক নেটিজেন লিখেন, ‘সারাদিন চ্যাম্পিয়ন দলের সংবর্ধনা দেখলাম। টানা কয়েক ঘণ্টা বসেছিলাম টিভির সামনে। সবার অনেক অনেক পজিটিভ কথা শুনলাম। দিনশেষে স্ট্যাটাস দেয়ার অনেক পজিটিভ আইডিয়া ভেবে ছবিও নামিয়ে রেখেছিলাম। তবে আফসোস শেষ সময়ে এসে আমার সব পজিটিভিটি নস্যাৎ করে দিল এই একটি ছবি! হায় বাংলাদেশ, হায় বাফুফে!’
শামীমা দৌলা নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী নিজের পোস্টে লিখেন, ‘সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী ফুটবল টিমের ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন, কোচ মুর্শেদীসহ সামনের সারিতে বসা সবাইকে অভিনন্দন ভালো খেলার জন্যে!!!’
এ দিকে বিমানবন্দরের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলসহ অনেক কর্মকর্তারা সাফজয়ী নারী দলের সঙ্গে ফটোসেশন করেন। কিন্তু সামনে থাকা কর্মকর্তাদের দাঁড়ানোতে মেয়ে ফুটবলারদের চিনতে পারাই কষ্টকর।
সেই ছবি পোস্ট করে সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন লিখেন, ‘চমৎকার ফটোগ্রাফী। ক্যামেরায় ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স ব্যবহার করা হয়েছে সম্ভবত। আলোর প্রক্ষেপণ খুবই সুন্দর। কালার কম্বিনেশন চমৎকার এবং অনেক হাই পিক্সেল ছবি। ক্যামেরাম্যানকে ধন্যবাদ। আমাদের বিজয়ী বাচ্চাদের হাসিমাখা মুখগুলো স্পষ্ট দেখে অন্তরটা শীতল হয়ে গেল। ’