খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট সিন্ডিকেট, নানা অনিয়ম ও বাতি জ্বালানোর জন্য বরাদ্দ তেলের টাকা ভাগাভাগিতে এবার নিজেই ফেঁসেছেন স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার। প্রতি মাসে ১৪০ লিটার কেরোসিন তেলের টাকা ‘স্বচ্ছ পন্থায়’ ব্যয় না করা এবং কর্মচারীদের অনুকূলে বরাদ্দ দু’ ভাগ টিকিটের ‘অস্বচ্ছ বণ্টনের’ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। যদিও বরাবরের মতো সব অভিযোগ অস্বীকার করেন স্টেশন মাস্টার।
খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
বিভিন্ন ভিআইপি ব্যক্তিদের নামের ভুয়া চাহিদা দেখিয়ে টিকিট বরাদ্দ নেয় সিন্ডিকেট চক্র। পরে তা বাইরে বিক্রি করা হয় উচ্চমূল্যে। এ সব ঘটনা জানাজানি হলে খুলনায় রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেরাই বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।
‘স্টেশনে টিকিট সিন্ডিকেটের’ কথা উল্লেখ করে দুই সহকারী স্টেশন মাস্টারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার। তবে পাল্টা অভিযোগ ওঠে টিকিট সিন্ডিকেট ও বরাদ্দকৃত তেলের টাকা ভাগাভাগিতে স্টেশন মাস্টার নিজেই জড়িত।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে দুর্নীতি অনিয়ম তদন্তে গঠন করা হয় তিন সদস্যের কমিটি। প্রতিবেদনের একটি কপিও এসেছে নিউজ টোয়েন্টি ফোরের হাতে।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, স্টেশন মাস্টার মানিকচন্দ্র সরকার আলামত ছাড়া সহকারী স্টেশন মাস্টারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে জিডি করে রেলওয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। রেলওয়ে স্টেশনের জন্য বরাদ্দ ১৪০ লিটার কেরোসিনের মূল্য বাবদ প্রতি মাসে ১১ হাজার ২০০ টাকা মানিকচন্দ্র সরকার উত্তোলন করেছেন এবং স্বচ্ছ পন্থায় তা ব্যয় করা হয়নি। রেলওয়ে কর্মচারীদের অনুকূলে দু’ভাগ সংরক্ষিত টিকিট অস্বচ্ছভাবে বণ্টন করেছেন।
এদিকে তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিবেদন দাখিলের পর বদলি করা সহকারী স্টেশন মাস্টারদের খুলনা স্টেশনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্টেশনের জুনিয়র টিটি আল মামুন রাজা।
এ ঘটনায় মানিক চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়াসহ টিকিট কালোবাজারি বন্ধে বেশকিছু সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। কমিটির বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী ও কমিটির আহ্বায়ক ওয়ালিউল হক তমাল এ কথা জানান।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিবেদনের ৮০ ভাগ সুপারিশ স্টেশনে বাস্তবায়িত হয়েছে। বাকি ২০ ভাগ বাস্তবায়নে কাজ চলছে।