December 24, 2024, 2:00 pm

লেখক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলায় টিআইবি’র উদ্বেগ প্রকাশ

Reporter Name
  • Update Time : Saturday, June 20, 2020,
  • 170 Time View

এম.এস রিয়াদ: লেখক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামলা, ডিজিটাল আইনে মামলা, হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বিষয়গুলোকে ‘অগণতান্ত্রিক হয়রানি’ উল্লেখ করে এগুলো বন্ধ এবং আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২০ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অনেককেই অন্যায্য মামলায় নিগৃহীত করে কারাগারেও পাঠানো হয়েছে। এটা শুধু স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য হুমকি নয়, বরং এসবের মধ্য দিয়ে দেশে স্বেচ্ছাচারিতাকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ও স্বাভাবিকতায় রূপান্তর করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলতে চাই, আপনারা কাজ দিয়ে সমালোচনার জবাব দিন, প্রকাশিত তথ্যের গুরুত্ব দিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করুন। তথ্যপ্রকাশ নিয়ন্ত্রণ করে, বা ভিন্নমত দমন করে অগণতান্ত্রিক ও স্বেচ্ছাচারিতার পথে হাঁটবেন না। অবিলম্বে এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও নিবর্তনমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং অন্যায্যভাবে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি দুর্নীতি-অনিয়মের ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে নির্মোহ ও যথাযথ তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এবছর বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা এবং আটকের সমালোচনা করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘রাষ্ট্রের উচিত ছিল এমন পরিবেশ তৈরি করা- যাতে গণমাধ্যম স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠভাবে তথ্যপ্রকাশ করতে পারে। কারণ তথ্যের স্বাভাবিক প্রকাশ বা প্রবাহে ঘাটতি পড়লে গুজব ও আস্থাহীনতার বিকাশ ঘটবেই। বাস্তব তথ্যের সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে প্রকাশিত তথ্যের যত বেশি ফারাক হবে, তত বেশি আতঙ্ক সৃষ্টি হবে, সংকট বাড়বে এবং ভুল পরিকল্পনার আত্মঘাতী ঝুঁকি তৈরি হবে। অথচ ডিজিটাল নিরাপত্তার অজুহাত তুলে জনগণের স্বাধীন মতপ্রকাশের প্রতিবন্ধক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্র গণমাধ্যমসহ নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চাপের মুখে রেখেছে। তাই অবিলম্বে এই আইনের বিতর্কিত ধারাসমূহ বাতিল করতে হবে এবং দুর্নীতি-অনিয়মের তথ্যপ্রকাশকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করে ইতোমধ্যে আটককৃতদের মুক্তি দিতে হবে।’

বিবৃতিতে জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে কার্টুনিস্ট, সাংবাদিকসহ ৭৯টি ঘটনায় মোট ৮৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব মামলায় সাংবাদিকসহ অন্যান্য নাগরিকদের যে প্রক্রিয়ায় গ্রেফতার ও নির্যাতন করা হয়েছে, তা একটি ‘গণতান্ত্রিক দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারকে ভূলুণ্ঠিত করে স্বেচ্ছাচারিতার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের শামিল’ বলে মনে করে টিআইবি।

সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের নিখোঁজ হওয়ার রহস্যের সমাধান না করে উল্টো নিজ দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায় গ্রেফতার প্রসঙ্গে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “দুর্নীতি-অনিয়মের বিভিন্ন তথ্যপ্রকাশ কিংবা সমালোচনার প্রেক্ষিতে এ ধরনের আচরণ একদিকে যেমন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘শুন্য সহনশীলতা’ ঘোষণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তেমনি স্বাধীন মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থি। বিশেষ করে, স্বাধীন মত বা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে একজন নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা করাটাই যেখানে নিবর্তনমূলক, সেখানে এ ধরনের মামলার সূত্রে আটককৃতদের নিগৃহীত করা নাগরিক অধিকারের চূড়ান্ত অবমাননা। অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে তথ্যপ্রকাশকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করে প্রকাশিত তথ্য যাচাই করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াই যেখানে রাষ্ট্রের দায়িত্ব, তা না করে উল্টো তথ্যপ্রকাশকারীর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ায় প্রশ্ন আসা অস্বাভাবিক নয় যে, রাষ্ট্র কি তবে অনিয়ম, দুর্নীতির তথ্য উদ্ঘাটনে নিরুৎসাহিত করছে, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে না-কী দুর্নীতির বিচারহীনতা নিশ্চিতের প্রয়াসে লিপ্ত রয়েছে!’

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71