রাত তখন ১টা। গভীর রাতে বন্ধুকে সহযোগিতা করতে প্রশ্ন চুরির মতো এক দুঃসাহসী কাজে নেমে পড়ে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। এ জন্য গভীর রাতেই প্রাচীর ডিঙিয়ে একটি স্কুলে প্রবেশ করে সে। কিন্তু ধরা পড়ে যায় অবশেষে।
শনিবার রাতে ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনাটি ঘটে।
আটক শিক্ষার্থী টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত। আটকের পর নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ছাড়াও ওই শিক্ষার্থীর মা গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনেন।
বালিকা বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর প্রশ্ন চুরির মিশনে সহযোগী ছিল আরও তিন সহপাঠী। এর মধ্যে একজন ওই বালিকা বিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী। মূলত তার জন্যই প্রশ্ন চুরি করতে গিয়েছিল আটক ছাত্রী। এ কাজে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রও তাকে সহযোগিতা করে।
এসএসসির টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র চুরি করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। এ জন্য তারা কয়েকটি নকল চাবিও বানিয়েছিল।
রাত ১টার দিকে নকল চাবি নিয়ে প্রাচীর টপকে স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করে তাদের দুজন। পরে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে তারা কয়েকটি আলমারির তালা খুলতে শুরু করে।
এ সময় পাশের কক্ষে থাকা নৈশপ্রহরী ফজলু তালা খোলার শব্দ শুনতে পেয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এসে প্রবেশ করেন। এ অবস্থায় একজন আটকে পড়ে, অন্যজন পালিয়ে যায়।
আটকে পড়া শিক্ষার্থী হাতে থাকা একটি ছুরি দেখিয়ে নৈশপ্রহরীকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। পরে তাকে ছেড়ে দেয়ার আশ্বাসে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদের বাসায় নিয়ে যান নৈশপ্রহরী।
ঘটনার বিস্তারিত শুনে রাতেই লাল মাহমুদ আটক শিক্ষার্থীর স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন ও শিক্ষার্থীর মাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। তারা এসে মেয়েকে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদ জানান, স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টারে একসঙ্গে পড়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা। সেখানেই বিপদে পড়া সহপাঠীকে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দলটি।
লাল মাহমুদ বলেন, ছেলেদের পোশাকে আমাদের স্কুলে প্রবেশ করে অন্য স্কুলের ছাত্রী। এর আগে ফিল্মি স্টাইলে তালার ছবি তোলে এগুলোর নকল চাবি বানায় তারা। নাইটগার্ড তাকে ছুরিসহ হাতেনাতে আটক করেছে। আটকের পর তাকে তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামানও।