কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করায় বর্তমান স্বামীর ছুরিকাঘাতে রুবেল মিয়া ওরফে রবিন নামের এক যুবক খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত জাবেদকে আটক করেছে পুলিশ। রবিন ও ঝুমুর পরিবারের অমতে ১৪ বছর আগে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে সোহান (১৩) ও সোহানা (১১) নামে দু’টি সন্তান রয়েছে।
সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে এক বছর আগে রবিন লিবিয়ায় পাড়ি জমান। এ সুযোগে প্রতিবেশী চা-দোকানি এক সন্তানের জনক জাবেদ মিয়ার সঙ্গে প্রেমে জড়ান ঝুমুর।
এ খবর পেয়ে রবিন দেশে ফিরে আসেন। শুরু হয় তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব। প্রতিদিন চলে ঝগড়া-মারামারি। এক পর্যায়ে রবিন একদিন তার স্ত্রীর মাথার চুল কেটে দেন। এ নিয়ে ঝুমুর নারী নির্যাতন মামলা করলে রবিনকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠায় পুলিশ। পাঁচ মাস আগে ঝুমুর রবিনকে তালাক দিয়ে জাবেদকে বিয়ে করে দুই সন্তানসহ তার বাড়িতে ওঠেন। রবিন জেল থেকে জামিনে এসে স্ত্রী ঝুমুরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তাদের মোবাইল ফোনে কথা হয়। এ কথা জেনে ক্ষেপে যান জাবেদ। এ নিয়ে জাবেদ-রবিনের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। প্রায়ই একে অপরকে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন।
এরই জেরে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জাবেদ ও তার বোনের ছেলে সৌরভ রবিনদের বাড়িতে ঢুকে তার বৃদ্ধ বাবা মুসলিম মিয়াকে মারধর করেন। এ সময় রবিন এগিয়ে এলে তার সঙ্গে মারামারি বাধে। এক পর্যায়ে জাবেদ রবিনের বুকে ছুরিকাঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসকরা বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার ভোর ৩টার দিকে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
নিহত রবিনের বাবা মুসলিম মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অবৈধ সম্পর্ক করে আমার ছেলের বউকে নিয়ে গেছে জাবেদ। সঙ্গে আমার দুটি নাতি-নাতনিও। এখন আমার তরতাজা ছেলেটাকে আমার চোখের সামনে খুন করে ফেললো। এর বিচার চাই। খুনি জাবেদ ও তার ভাগনে সৌরভের ফাঁসি চাই। ’
ভৈরব থানার পরিদর্শক (অপারেশন) কায়সার আহমেদ এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, খবর পেয়ে রাতেই অভিযুক্ত জাবেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুপুরে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হবে। এছাড়া মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রবিনের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি। তাদের অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।