আজ ভয়াল সিডর দিবস। ঠিক ১৫ বছর আগে, এই দিনে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হেনেছিল প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডর। এর ধ্বংসলীলায় প্রাণ হারিয়েছিল কয়েক হাজার মানুষ। যারা বেঁচে ছিলেন তারাও হারিয়েছেন ঘরবাড়ি, গবাদি পশু।
সে এক ভয়ংকর রাতের গল্প। উপকূলবাসী বলছে, সাইক্লোন সেন্টারের অভাবেই সে রাতে এত প্রাণহানি হয়েছিল।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর। ঘড়ির কাঁটায় সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিট। মহাবিপদ সংকেতে উপকূলে শঙ্কার কালো মেঘ। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে বইছে দমকা হাওয়া। কিছুক্ষণ পর আঘাত হানতে শুরু করলো প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডর। দমকা হাওয়া আর ঝড়ো হওয়ায় বিধ্বস্ত হতে থাকে ঘরবাড়ি। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সব উড়িয়ে ভাসিয়ে নেওয়ার পর সিডরে কেড়ে নিতে শুরু করে একের পর এক প্রাণ। মাত্র ১০ মিনিটের জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ যায় উপকূলের কয়েক হাজার মানুষের।
চারিদিকে ধ্বংসলীলা। লাশের পর লাশ। সিডরের আঘাতে বরগুনার এক হাজার ৩৪৫ জন মানুষ মারা যান। সাড়ে ৩০ হাজার গবাদি পশু মারা যায়; আর হাঁস মুরগী মারা যায় সাড়ে ছয় লাখের বেশি। আর পটুয়াখালীতে প্রাণ যায় অন্তত ছয় হাজার মানুষের। বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ জনপদ।
সেই ঘটনার সাক্ষি এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, সচেতনতার অভাব ও পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার না থাকায় মারা গেছেন অনেকে। পর্যাপ্ত শেল্টারের অভাব আছে এখনো। এখনো নির্মিত হয়নি টেকসই বেড়িবাঁধ।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় স্থায়ী বেরিবাঁধের পাশাপাশি আরও সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে আশ্বাসের বৃত্ত ভেঙে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন-এমনটাই প্রত্যাশা করেন উপকূলবাসী।