চাঁপাইনবাবগঞ্জে মধুমতি এনজিও’র পরিচালক মাসুদ রানাকে অবৈধ অস্ত্রসহ আটক করেছে গোমস্তাপুর থানা পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে চৌডালা ব্রীজের টোলঘর এলাকা থেকে তাকে আটক করে গোমস্তাপুর থানার এসআই শাহরিয়ার।
গোমস্তাপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আটককৃত মাসুদ রানা তার অস্ত্রের কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
এদিকে এনজিওটির পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে ফেরত না দেয়ার।
অভিযোগে জানা গেছে, শিবগঞ্জে এমআরএ’র কোন অনুমতি ছাড়াই গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা আমানত নিয়ে টাকা ফেরত দিতে টালবাহানা শুরু করেছে মধুমতি সামজ উন্নয়ন সংস্থা নামে এনজিওটি। ইতোমধ্যে ওই এনজিও’র কর্মীরা গ্রাহকের সাড়ে ৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর শাখা ব্যবস্থাপক আবু সায়েম প্রায় ৫৯ লাখ টাকা ও কর্মী শামীম রেজা ৪৩ লাখ টাকা, শ্যামপুর শাখার কর্মী মো. নয়ন আলী ১৫ লাখ টাকা ও ছত্রাজিতপুর শাখা ব্যবস্থাপক আব্দুল খালেক ৮০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। এছাড়াও আরো কয়েকজন কর্মী প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেলেও তাদের এখনো কোন সন্ধান মেলেনি। তারপরও মধুমতি এনজিও কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
বিনোদপুর শাখার গ্রাহক মোসা. শামিমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, তার এফডিআর এর জমাকৃত সাড়ে ৩ লাখ টাকা উত্তোলন করতে গেলে মধুমতি সামজ উন্নয়ন সংস্থার শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইসমাইল হোসেন টাকা না দিয়ে উল্টো তার সাথে অসাদাচারণ করে। তবে শুধু শামিমা আক্তারই নয়, মো. আলম আলীর ১০ লাখ টাকা, মোসা. নাজমা বেগমের ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মোসা. সুমি বেগমের ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বেনজির আহম্মেদের ৩ লাখ টাকাসহ অর্ধশতাধিক গ্রাহকের এফডিআর এর লাখ লাখ টাকা নিয়ে ফেরত দিতে টালবাহানা করছেন সংস্থাটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে গত বৃহষ্পতিবার (১০ নভেম্বর) দাদনচক শাখায় ২০/২৫ জন গ্রাহক এফডিআর এর টাকা উত্তোলনের জন্য গেলে তাদের টাকা না দিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা ফেরত না দিয়েই বিদায় করে দেন।
এদিকে গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার একটি ভিডিও বক্তব্য প্রকাশ করেছেন এবং নিজের দোষ ঢেকে তিনি এ ঘটনার জন্য দেশের অর্থনৈতিক সংকটকে দায়ী করে গ্রাহকদের ধৈর্যধারণ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
অন্যদিকে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, মধুমতি এনওজি’র পরিচালক গ্রাহকদের আমানত সংগ্রহ করে মধুমতি নামে একটি গ্রুপ কোম্পানী খুলে এনজিও’র টাকা সেখানে লগ্নি করেছেন এবং বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী নিজে তৈরী না করে অন্য জায়গা থেকে কিনে এনে চটকদার মোড়কে মোড়কজাত করে তা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও তার অর্ধ শতাধিক ট্রাক রয়েছে। যার মধ্যে কয়েকটি ট্রাকে মাদক বহনের কারণে দেশের বিভিন্ন থানায় আটক রয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসা. উম্মে কুলসুম জানান, সবগুলো এনজিও সংস্থা সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধিত নয়। কিছু কিছু এনজিও সংস্থা সমাজসেবা থেকে নিবন্ধিত। তবে এনজিও সংস্থার আরএমএ’র কোন অনুমোদন না থাকা এনজিওগুলোর ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।