গোটা ইউরোপেজুড়ে ঋতুর পরিবর্তন হচ্ছে। প্রবেশ করছে শীত। এরই মধ্যে ইউক্রেনের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ অবকাঠামোগুলোতে হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া। প্রভাব পড়ছে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায়।
বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ছে ইউক্রেনীয় জনগণ। এরই মধ্যে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে ইউক্রেনে। এমন সময়ে জীবননাশের মতো হুমকিতে রয়েছে দেশটির জনগণেরা। এমনি সতর্কতা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। খবর আল-জাজিরার।
ডব্লিউএইচওর সতর্ক বার্তার উদ্ধৃতি দিয়ে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, চলতি বছরের ইউক্রেনের লক্ষাধিক জনগণ জীবননাশের মতো হুমকিপূর্ণ শীতের মুখোমুখি হচ্ছে। কারণ তাপমাত্রা হ্রাসের সঙ্গে সঙ্গে রাশিয়া দেশটির জ্বালানি অবকাঠামোকে আঘাত করে চলেছে।
আল-জাজিরা জানায়, সবশেষ কয়েক সপ্তাহে পানির লাইন, বিদ্যুৎ স্থাপনাসহ বেসামরিক অবকাঠামোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে রুশ বাহিনী। এতে করে সারা দেশে ঘরগুলো বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ছে। এমনকি ইউক্রেনীয়দের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সংকটকে আরও জটিল করে তুলছে।
ডব্লিউএইচওর ইউরোপ অঞ্চলের পরিচালক হানস হেনরি পি ক্লুজ বলেন, ‘ইউক্রেনের বিদ্যুৎ স্থাপনার অর্ধেক ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা ধ্বংস হয়েছে। বিষয়টি ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও মানব স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে। ’
কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্লুজ বলেন, ‘চলতি শীত হবে ইউক্রেনীয়দের বেঁচে থাকার লড়াই। এখনও প্রায় এক কোটি ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। ’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাটির মতে, এই শীতে উষ্ণতা এবং নিরাপত্তার সন্ধানে ৩০ লাখ ইউক্রেনীয় তাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে পারে। দেশটির কিছু অংশে তাপমাত্রা -২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।
ক্লুজ বলেন, ‘এই শীতে ভয়ঙ্কর পরীক্ষা দিতে হবে ইউক্রেনীয়দের। জ্বালানি ও বিদ্যুতের সংকট মানুষদের মনস্তাত্বিকে প্রভাব ফেলবে। এ ছাড়া বিভিন্ন সংক্রমণ রোগের ঝুঁকি বাড়াবে। ’
‘তারা অনন্য স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে, যার মধ্যে রয়েছে কোভিড-১৯, নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ। এ ছাড়া টিকার আওতায় না আসা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ডিপথেরিয়া এবং হামের ঝুঁকি বাড়বে,’ যোগ করে তিনি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণ চালায় রাশিয়া। এরপরেই প্রতিবেশী দুদেশের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধে। যুদ্ধের নয় মাসে ইউক্রেনের ৭০০ এর বেশি স্বাস্থ্য অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।