শেরপুরের নকলায় স্ত্রী (৩৫) হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। রোববার (৪ ডিসেম্বর) ভোরে উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের জানকিপুর এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। নিহত শাহনাজ বেগম ওই গ্রামের শাহজামালের মেয়ে ও ২ সন্তানের জননী। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে স্বামী রাসেল মিয়া।
জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে শাহনাজের প্রথম বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী বাড়ির সুরুজ মিয়ার ছেলে মানিক মিয়ার সাথে। ১২ বছর আগে তাঁদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। সে সংসারে শাহনাজের ২টি সন্তান রয়েছে। পরবর্তীতে জীবিকার তাগিদে শাহনাজ গাজীপুরের ঘরঘরিয়া মাস্টারবাড়ি এলাকায় একটি পোশাক তৈরি কারখানায় কাজ নেয়। সেখানে পরিচয় হয় স্থানীয় মজিবর রহমানের ছেলে রাসেল খানের (৫০) সাথে। পরিচয়ের একপর্যায়ে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু রাসেলের স্ত্রী-সন্তান থাকায় এ নিয়ে পারিবারিক অশান্তি বাড়তে থাকে। বছর তিনেক আগে শাহানাজ রাসেলকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে। সেখানে আলাদা বাড়িতে থেকে দিনমজুরের কাজ করে চলতো তাদের সংসার। কিন্তু পারিবারিক অশান্তি তাদের পিছু ছাড়ছিলো না। প্রতিদিনের মতো শনিবার রাতে তাঁদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়।
ঝগড়ার একপর্যায়ে রাসেল শাহনাজকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং বাহির থেকে ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। রোববার সকালে ঘরের বাইরে থেকে তালা দেওয়া দেখে পরিবারের অন্য সদস্যরা ডাকাডাকির এক পর্যায়ে কোনো সাড়া না পেলে তালা ভেঙে ভেতরে গেলে শাহনাজের রক্তাক্ত লাশ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শাহনাজের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়াসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া জানান, ধারণা করা হচ্ছে, গতকাল রাতে তর্ক-বিতর্কের জের ধরে কোনো একসময় শাহনাজকে হত্যা করে থাকতে পারে তার স্বামী। ওই ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। শাহনাজের স্বামীকে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। আশা করছি দ্রুতই তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব।