মাদারীপুর সদর উপজেলায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারকৃত সড়ক ৬ মাসের মাথায় ভেঙ্গে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে অধিকাংশ স্থানে গর্তসহ রাস্তা ধসে ও দেবে গেছে। সংস্কারের কাজ শেষ হতে না হতেই এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চর গোবিন্দপুর বাবনাতলা রোড থেকে মৃধারমোড় পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার কার্পেটিং (মেরামত) এর কাজটি করেছেন মো. এমদাদ হোসেন নামে বরিশালের একজন ঠিকাদার।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওটিবিএল লাইসেন্সে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় সড়ক কার্পেটিং এর কাজটি শুরু করেন।
আগস্ট মাসের শেষ দিকে সড়ক মেরামতের কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়ক বিভাগকে বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু ১৩ কোটি ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে মেরামতকৃত সড়ক কয়েকদিন পরই তা উঠে যেতে থাকে। পর্যায়ক্রমে প্রায় ৬ মাসেই বিভিন্ন স্থানের পিচ নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থান ভেঙে গেছে। এই সড়কের আঙ্গুলকাটা পুলিশ ফাঁড়ির ১মিটার দক্ষিণ থেকে শুরু করে আঙ্গুলকাটা গ্রামের অধিকাংশ অংশ বর্তমানে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
ইজিবাইক চালক ফজলু খান বলেন, আমি কয়েকদিন এখান দিয়ে যাওয়ার পথে ইজিবাইক নিয়ে খালে পড়ে যাই। দুদিন পর পর রাস্তা ঠিক করে আর তা ভেঙে যায়। কি ঠিক করে যে এতো তাড়াতাড়ি ভাঙে? সরকারের কাছে দাবি ভালোভাবে রাস্তাটা ঠিক করে তাহলে আর ভাঙবে না।
অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার সাকিল বেপারী বলেন, ‘রাস্তাটি কয়েক মাস আগে কাজ শেষ করছে। এরই মধ্যে মূল সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ’
এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. এমদাদ হোসেন জানান, রাস্তার পাশের খালের গভীরতা বেশি থাকার কারণে ভেঙে গেছে বা ধসে পড়েছে। আবার কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেখানে রাস্তা ভেঙ্গে গেছে বা ধসে পড়েছে সেখানে আবার সংস্কার করার কাজ শুরু করেছি। আমাদের কাজে কোন গাফিলতি নেই।
মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাফিউজ্জামান বলেন, খালের মাটি বেশি খনন করার কারণে রাস্তা ভেঙে গেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বলেছি দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করার জন্য। রাস্তা নির্মাণের কয়েক মাসের মাথায় তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি তিনি। তবে তিনি বলেন, যেখানে যেখানে ভেঙে পড়েছে সেখানে মেরামত করার জন্য আমরা তাদেরকে বলে দিয়েছি।