জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে খুলনায় গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুদিনের ব্যক্তিগত সফরের প্রথম দিন শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় সড়কপথে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তিনি। পরে খানজাহান আলী সেতু (রূপসা সেতু) পার হয়ে আড়ংঘাটা বাইপাস ধরে দিঘলিয়া ঘাটে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে দিঘলিয়া উপজেলার নগরঘাট এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে কেনা দুটি পাট গুদাম পরিদর্শন করার কথা রয়েছে।
খুলনায় ব্যক্তিগত সব কর্মসূচি শেষে সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়া ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী। খুলনা থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার টুঙ্গিপাড়ায় রাতযাপন করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে পুরো খুলনা নিরাপত্তা বলয়ে ঢেকে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে খুলনা সফরে তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেবেন কি না, তা জানা যায়নি। প্রধানমন্ত্রীর এ খুলনা সফর ফিরে সেখানকার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে খুশির বান ডেকেছে।
আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দিতে সবশেষ ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনা সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুর কেনা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় ৪ বিঘা জমি আছে। সেই সম্পত্তিতে আছে গোডাউন, যা এখন ‘শেখ হাসিনার গোডাউন’ নামে পরিচিত।
এর আগে আজ সকাল ৮টার পর ঢাকা থেকে সড়কপথে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী গাড়িবহর। সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান। এরপর টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান এবং সেখানে কিছুক্ষণ তিনি নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
টানা দশমবারের মতো আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর এটাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রথম টুঙ্গিপাড়া সফর। টুঙ্গিপাড়া সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
সফরের দ্বিতীয় দিন আগামীকাল শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয়প্রধান হিসেবে নবগঠিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেবেন নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির আওয়ামী লীগ নেতারা।
পরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নবগঠিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ সদর, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলার ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। শনিবার সন্ধ্যায় টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে সরকারপ্রধানের।